ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন বিভিন্ন উপজেলা ও সাব-স্টেশনে কর্মরত ৫৭৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ৫৬৯ গণছুটিতে গেছেন। তার মধ্যে ফেনী সদর উপজেলার ১১৭ জন, ছাগলনাইয়া উপজেলা জোনাল অফিসে ৮৫ জনের মধ্যে ৭০ জন, দাগনভূঞা উপজেলা জোনাল অফিসে ৭৪ জনের মধ্যে ৬৭ জন, পরশুরাম উপজেলায় ৪১ জনের মধ্যে ৩৯ জন, ফুলগাজী উপজেলায় ৪৯ জনের মধ্যে ৪৩ জন ও সোনাগাজীতে ৭৫ জনের মধ্যে ৬৮ জন গণছুটিতে রয়েছেন।
ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুরের বাসিন্দা ইয়াকুব হোসেন নামে এক গ্রাহক বলেন, রোববার থেকেই বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। অভিযোগ জানাতে গেলে দেখি অফিসে তালা ঝুলছে। কবে এ সমস্যার সমাধান হবে, তা কিছুই বুঝতে পারছি না।
পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর গ্রামের মো. নাহিদ বলেন, রোববার দিবাগত রাত ৪টা থেকে সারাদিন বিদ্যুৎ নেই। এদিন রাত ৯টার পরও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের জরুরি সেবার মোবাইল নম্বরও বন্ধ রয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের পোল্ট্রি খামারি মো. রফিক বলেন, বিদ্যুৎ আমাদের খামারিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হয়। বর্তমানে লম্বা সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বড় ধরনের লোকসানের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দ্রুত এ সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনকারী পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মকর্তা বলেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছি। বারবার আশ্বাস পেলেও কার্যকর হয়নি কিছুই। দাবি আদায় না হলে আমরা কাজে ফিরব না। তবে জনভোগান্তি আমাদের উদ্দেশ্য নয়।
ফেনী সদর উপজেলার কসকা জোনাল অফিসের এজিএম কামরুল হাসান বলেন, এ অফিসে ৪০ জন কর্মচারীর মধ্যে ৩৫ জন ছুটির আবেদন ফরম দিয়ে গণছুটিতে গেছেন। বাকি ৫ জন কর্মচারী দিয়ে ৩২ হাজার গ্রাহকের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সদর উপজেলা লেমুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর ও মিরগঞ্জ এলাকায় বিদ্যুৎ সমস্যার কথা জানালেও জনবল না থাকায় সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ নুরুল হোসাইন বলেন, জেলার ছয় উপজেলার জোনাল অফিসসহ বিভিন্ন সাব-স্টেশন অফিসে কর্মরত ৫৭৯ জনের মধ্যে ৫৬৯ আবেদন ফরম জমা দিয়ে গণছুটিতে গেছেন। তাদের মধ্যে পরবর্তীতে ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে উপস্থিত রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে বর্তমানে ফুলগাজীতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকলেও মেরামত কাজে বিলম্ব হচ্ছে। গণছুটিতে যাওয়া কর্মীদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে কাজে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।
কর্মরতদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত ও বরখাস্তদের পুনর্বহাল, ২. অব্যবস্থাপনার অবসান, ৩. বদলির নামে হয়রানি বন্ধ, ৪. দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।