ময়মনসিংহ , রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
হাদির ওপর হামলাকারীদের ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সরকার বললেন রিজওয়ানা অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২: তিনজন গ্রেপ্তার খাগড়াছড়িতে প্রধান বিচারপতি বিকালে বিদায়ী ভাষণ দিবেন নির্বাচন অফিসে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইসির চিঠি আইজিপিকে হাদির ওপর হামলা নির্বাচনবিরোধী ষড়যন্ত্র বললেন নাহিদ আশঙ্কা করছি, হাদির মতো এ রকম ঘটনা আরও ঘটতে পারে বললেন মির্জা ফখরুল ‘ মির্জা ফখরুলের দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি ফাইল তন্নতন্ন করে খুঁজেও’ আগামীর বাংলাদেশ গড়ে উঠবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে বললেন মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা দেশকে মেধাহীন করতে হাদিকে হত্যাচেষ্টা, হিট লিস্টে অনেকেই বললেন আসিফ মাহমুদ আজ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

বাকৃবির সোহরাওয়ার্দী হলে গেস্টরুমের ঘটনায় ২৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে নবীন শিক্ষার্থীদের গেস্টরুম করানোর ঘটনায় ১ বছরের জন্যে হল থেকে ২৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি জানিয়েছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান মোল্যা।

জানা যায়, গত শনিবার রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের রিডিং রুমে ডেকে নেওয়া হয়। শুরুতেই তাদের মোবাইল ফোন রুমে রেখে আসতে বাধ্য করা হয় এবং মোবাইল আছে কি না, তা তল্লাশি করা হয়।

এরপর দ্বিতীয় বর্ষের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী নবীনদের কিছু অদ্ভুত নিয়ম জানায়, যেগুলো তাদের মেনে চলতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব নিয়মের মধ্যে ছিল—সাইকেল চালানো নিষেধ, দ্বিতীয় তলায় যাওয়া যাবে না, বড় ভাইদের সঙ্গে দেখা হলে প্রতিবার সালাম, পরিচয় এবং হ্যান্ডশেক করতে হবে, হলে লুঙ্গি পরা যাবে না, হলের গ্রন্থাগারে ল্যাপটপ নেওয়া যাবে না এবং হলের ক্যান্টিনে যাওয়া যাবে না।

পরে তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী নবীনদের দাবি-দাওয়া জানতে চাইলে নবীনরা হলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর, দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা নবীনদের ওপর চড়াও হন। তারা নবীনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং সমস্যাগুলো বড় ভাইদের কাছে জানানোকে ‘অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেন।

এখানেই শেষ নয়। ছোটখাটো ভুল (যেমন—হাত বাকা রেখে দাঁড়ানো, মাথা উঁচু বা নিচু করে রাখা) উল্লেখ করে নবীনদের একজন একজন করে ডেকে অপমান করা হয়। তাদের বিভিন্ন উদ্ভট শাস্তি দেওয়া হয়, যার মধ্যে ছিল—১০ রকমের হাসি দেওয়া, ১০ রকমের সালাম করা, গাছে ঝুলে থাকার অভিনয় করা এবং নাচ করার আদেশ দেওয়া।

এমন মানসিক চাপ ও অপমানজনক পরিস্থিতিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী মাথা ঘুরে পড়ে যায়। পরে তাকে হলের মধ্যেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হয়।রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই ‘গেস্টরুম’ কার্যক্রম শেষ হয়। পুরো ঘটনায় নবীন শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে বাকৃবি সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, সোহরাওয়ার্দী হলের ঘটনায় ৫২ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৭ জন সোহরাওয়ার্দী হলের ছাত্র ছাত্র আর বাকিদের এটাচমেন্ট অন্য হলে। কিন্তু তারা সোহরাওয়ার্দী হলে থাকে। সোহরাওয়ার্দী হলের ২৭ জনকে হল থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে এবং অধিকতার শাস্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে প্রেরণ করা হবে। যারা এই হলের ছাত্র না কিন্তু অবৈধভাবে থাকে এবং এই ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

হাদির ওপর হামলাকারীদের ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সরকার বললেন রিজওয়ানা

বাকৃবির সোহরাওয়ার্দী হলে গেস্টরুমের ঘটনায় ২৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

আপডেট সময় ১২:০৫:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে নবীন শিক্ষার্থীদের গেস্টরুম করানোর ঘটনায় ১ বছরের জন্যে হল থেকে ২৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি জানিয়েছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান মোল্যা।

জানা যায়, গত শনিবার রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের রিডিং রুমে ডেকে নেওয়া হয়। শুরুতেই তাদের মোবাইল ফোন রুমে রেখে আসতে বাধ্য করা হয় এবং মোবাইল আছে কি না, তা তল্লাশি করা হয়।

এরপর দ্বিতীয় বর্ষের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী নবীনদের কিছু অদ্ভুত নিয়ম জানায়, যেগুলো তাদের মেনে চলতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব নিয়মের মধ্যে ছিল—সাইকেল চালানো নিষেধ, দ্বিতীয় তলায় যাওয়া যাবে না, বড় ভাইদের সঙ্গে দেখা হলে প্রতিবার সালাম, পরিচয় এবং হ্যান্ডশেক করতে হবে, হলে লুঙ্গি পরা যাবে না, হলের গ্রন্থাগারে ল্যাপটপ নেওয়া যাবে না এবং হলের ক্যান্টিনে যাওয়া যাবে না।

পরে তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী নবীনদের দাবি-দাওয়া জানতে চাইলে নবীনরা হলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর, দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা নবীনদের ওপর চড়াও হন। তারা নবীনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং সমস্যাগুলো বড় ভাইদের কাছে জানানোকে ‘অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেন।

এখানেই শেষ নয়। ছোটখাটো ভুল (যেমন—হাত বাকা রেখে দাঁড়ানো, মাথা উঁচু বা নিচু করে রাখা) উল্লেখ করে নবীনদের একজন একজন করে ডেকে অপমান করা হয়। তাদের বিভিন্ন উদ্ভট শাস্তি দেওয়া হয়, যার মধ্যে ছিল—১০ রকমের হাসি দেওয়া, ১০ রকমের সালাম করা, গাছে ঝুলে থাকার অভিনয় করা এবং নাচ করার আদেশ দেওয়া।

এমন মানসিক চাপ ও অপমানজনক পরিস্থিতিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী মাথা ঘুরে পড়ে যায়। পরে তাকে হলের মধ্যেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হয়।রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই ‘গেস্টরুম’ কার্যক্রম শেষ হয়। পুরো ঘটনায় নবীন শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে বাকৃবি সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, সোহরাওয়ার্দী হলের ঘটনায় ৫২ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৭ জন সোহরাওয়ার্দী হলের ছাত্র ছাত্র আর বাকিদের এটাচমেন্ট অন্য হলে। কিন্তু তারা সোহরাওয়ার্দী হলে থাকে। সোহরাওয়ার্দী হলের ২৭ জনকে হল থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে এবং অধিকতার শাস্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে প্রেরণ করা হবে। যারা এই হলের ছাত্র না কিন্তু অবৈধভাবে থাকে এবং এই ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।