ময়মনসিংহ , বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

বিএনপির ক্ষোভ ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় ০৯:১৯:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রণীত সুপারিশমালা ‘প্রতারণামূলক’।

এটা অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।  গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন :অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশমালা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে। প্রধান উপদেষ্টার সইও আছে সেখানে, তিনিও এই কমিশনের চেয়ারম্যান। এখন অবাক বিস্ময় আমরা যেটা লক্ষ করেছি যে, আমরা খুব একেবারে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে যে বিষয়গুলোর সঙ্গে একমত ছিলাম না,  আমরা সেখানে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলাম। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল তাদের (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের)। অবাক বিষয়, আমরা লক্ষ করলাম যে, মঙ্গলবার যখন তারা এটা প্রকাশ করলেন, সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো নেই, পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। এটা তো ঐকমত্য হতে পারে না। তাহলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন? এই ঐকমত্য কমিশন, আমি বলব জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা। এগুলো অবিলম্বে সংশোধন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ  সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার সেই সংস্কারগুলো করে একটা নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে তারাই এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে।  এর থেকে যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে, তার দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই (প্রধান উপদেষ্টা) বহন করতে হবে।’  তিনি আরো বলেন, একটি কথা খুব পরিষ্কারভাবে আগেও বলেছিলাম, এখনো বলছি যে— আমরা মনে করি সমস্ত সংকটের মূলেই যে বিষয়টা আছে, এটা হচ্ছে সত্যিকার অর্থে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন। আমরা সেই কারণেই কিন্তু ৫ আগস্ট বিপ্লবের  পরেই  নির্বাচনের কথা বলেছিলাম। তখন বলা হয়েছিল আমরা নাকি ক্ষমতা চাই সেজন্য  অধিক দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছি। আজ প্রমাণিত হচ্ছে যে, এই নির্বাচনটা যত দেরি হচ্ছে তত বেশি সেই ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে, যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল দেখতে চায়।

আলোচনাসভায় গণসংহতি আন্দোলেনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচার, সংস্কার, নির্বাচন—এ তিনটি দেশের জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য বিষয়ের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন একটি জাতীয় যাত্রা শুরু করা দরকার। তা না হলে জনগণের অর্জন রক্ষা করা সম্ভব হবে না। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, যদি বিচারব্যবস্থা ন্যায়বিচার দিতে না পারে, নির্বাচন অবাধ না হয় এবং সংস্কার প্রক্রিয়া রাজনৈতিকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক না হয়, তাহলে রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরবে না। তিনি বলেন, দেশে ভয় ও দমননীতির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ আজ ভয় নিয়ে কথা বলে, ভয় নিয়ে রাস্তায় নামে—এটা গণতন্ত্রের চর্চা নয়, এটা শাসনের ভীতিকর রূপ। এক দলের জন্য এক রকম বিচার, আরেক দলের জন্য আরেক রকম—এটা ন্যায়বিচার নয়, এটা অন্যায়ের বৈধতা। চর্চা ডটকমের সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচার শাসন থেকে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল। এরপর কখনো কমেছে কখনো বেড়েছে; শেষ হয়নি।  তিনি বলেন, এই সরকারের মধ্যে লক্ষহীনতা লক্ষ্য করা গেছে। তারা কী চান, কতটুকু এগোবেন স্পষ্ট নয়—কখনো হঠকারিতা, দুর্বলতা, কখনো সিদ্ধান্তহীনতা দেখি। ফলে যে আশা নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছিল তা অনেকটা স্থিমিত। কবি ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী বলেন, এহ্সানের বইয়ে লেখাগুলো তিন ভাগে বিভক্ত— বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিএনপির ক্ষোভ ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় ০৯:১৯:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রণীত সুপারিশমালা ‘প্রতারণামূলক’।

এটা অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।  গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন :অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশমালা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে। প্রধান উপদেষ্টার সইও আছে সেখানে, তিনিও এই কমিশনের চেয়ারম্যান। এখন অবাক বিস্ময় আমরা যেটা লক্ষ করেছি যে, আমরা খুব একেবারে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে যে বিষয়গুলোর সঙ্গে একমত ছিলাম না,  আমরা সেখানে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলাম। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল তাদের (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের)। অবাক বিষয়, আমরা লক্ষ করলাম যে, মঙ্গলবার যখন তারা এটা প্রকাশ করলেন, সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো নেই, পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। এটা তো ঐকমত্য হতে পারে না। তাহলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন? এই ঐকমত্য কমিশন, আমি বলব জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা। এগুলো অবিলম্বে সংশোধন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ  সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার সেই সংস্কারগুলো করে একটা নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে তারাই এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে।  এর থেকে যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে, তার দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই (প্রধান উপদেষ্টা) বহন করতে হবে।’  তিনি আরো বলেন, একটি কথা খুব পরিষ্কারভাবে আগেও বলেছিলাম, এখনো বলছি যে— আমরা মনে করি সমস্ত সংকটের মূলেই যে বিষয়টা আছে, এটা হচ্ছে সত্যিকার অর্থে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন। আমরা সেই কারণেই কিন্তু ৫ আগস্ট বিপ্লবের  পরেই  নির্বাচনের কথা বলেছিলাম। তখন বলা হয়েছিল আমরা নাকি ক্ষমতা চাই সেজন্য  অধিক দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছি। আজ প্রমাণিত হচ্ছে যে, এই নির্বাচনটা যত দেরি হচ্ছে তত বেশি সেই ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে, যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল দেখতে চায়।

আলোচনাসভায় গণসংহতি আন্দোলেনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচার, সংস্কার, নির্বাচন—এ তিনটি দেশের জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য বিষয়ের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন একটি জাতীয় যাত্রা শুরু করা দরকার। তা না হলে জনগণের অর্জন রক্ষা করা সম্ভব হবে না। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, যদি বিচারব্যবস্থা ন্যায়বিচার দিতে না পারে, নির্বাচন অবাধ না হয় এবং সংস্কার প্রক্রিয়া রাজনৈতিকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক না হয়, তাহলে রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরবে না। তিনি বলেন, দেশে ভয় ও দমননীতির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ আজ ভয় নিয়ে কথা বলে, ভয় নিয়ে রাস্তায় নামে—এটা গণতন্ত্রের চর্চা নয়, এটা শাসনের ভীতিকর রূপ। এক দলের জন্য এক রকম বিচার, আরেক দলের জন্য আরেক রকম—এটা ন্যায়বিচার নয়, এটা অন্যায়ের বৈধতা। চর্চা ডটকমের সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচার শাসন থেকে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল। এরপর কখনো কমেছে কখনো বেড়েছে; শেষ হয়নি।  তিনি বলেন, এই সরকারের মধ্যে লক্ষহীনতা লক্ষ্য করা গেছে। তারা কী চান, কতটুকু এগোবেন স্পষ্ট নয়—কখনো হঠকারিতা, দুর্বলতা, কখনো সিদ্ধান্তহীনতা দেখি। ফলে যে আশা নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছিল তা অনেকটা স্থিমিত। কবি ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী বলেন, এহ্সানের বইয়ে লেখাগুলো তিন ভাগে বিভক্ত— বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।