ময়মনসিংহ , শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
দশমবারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নীতিশ কুমার আজ থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়কের আদলে চলার আহ্বান খসরুর এই রায়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে বললেন বদিউল আলম মজুমদার সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে , ট্রাকচালকসহ ৪ জন কারাগারে খায়রুল হকের রায়ে পরতে পরতে ভুল ছিল বললেন ব্যারিস্টার কাজল পুলিশের ওপর হামলা বাড়লে ঘরবাড়ি নিজেরাই পাহারা দিতে হবে বললেন ডিএমপি কমিশনার একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচিতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা কুমিল্লায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় নিয়ে যা : আমির খসরু তারেক রহমান জন্মদিনে নারীদের ৫ প্রতিশ্রুতি দিলেন সাফল্য-ব্যর্থতার সমালোচনায় পুরো চিত্র প্রতিফলিত হয় না বললেন শফিকুল আলম
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

মডেল ঘর পেঁয়াজ সংরক্ষণের

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ১১:০৬:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪
  • ৩২৮ বার পড়া হয়েছে

সংগৃহীত ছবি

অনলাইন নিউজ-

পেঁয়াজ চাষের জন্য রাজবাড়ী জেলার সুনাম আছে। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৪ শতাংশই উৎপাদিত হয় এই জেলায়। তবে কৃষকরা সব সময় ভালো দাম পান না। নানা কারণে দামের ওঠানামা চলে।মৌসুমের শেষ দিকে পেঁয়াজের দাম থাকে কিছুটা কম। তখন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারলে কৃষক পরে বিক্রি করে ভালো দাম পেতে পারেন। কিন্তু জায়গা বা সুবিধার অভাবে অনেক কৃষকই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেন না। নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাঁদের কম দামে হলেও পাইকারকে পেঁয়াজ দিয়ে দিতে হয়।

কৃষিসংশ্লিষ্টরা বলেন, সঠিক সংরক্ষণের অভাবে প্রতিবছর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়। কৃষকদের এই সমস্যা সমাধানে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রাজবাড়ীতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য ‘মডেল ঘর’ নির্মাণ করে দিচ্ছে।কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রাজবাড়ী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কালুখালী উপজেলায় ২০টি পেঁয়াজ সংরক্ষণের মডেল ঘর নির্মাণ করা হয়। চলতি অর্থবছরে বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।এর মধ্যে ১৫টি ঘরে কৃষকরা পেঁয়াজ রাখা শুরু করেছেন। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট গবেষণা করে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণের জন্য এই মডেল ঘরের নকশা বানিয়েছে।কৃষকদের বাড়ির উঠানে ১ শতাংশ জমিতে টিন, বাঁশ, লোহা ও কংক্রিটের সমন্বয়ে বানানো এই ঘরে তিন স্তরের মাচা রয়েছে। ঘরের নিচে আলো-বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পেছনে দেওয়া হয়েছে ছয়টি তাপনিয়ন্ত্রণ ফ্যান।ঝড়-বৃষ্টি থেকে পেঁয়াজ রক্ষা করতে চারপাশে রাখা হয়েছে ত্রিপল। প্রতিটি মডেল ঘরে ৩০০ মণ করে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে। এসব ঘরে পেঁয়াজ ছয় থেকে ৯ মাস ভালো থাকবে।

একেকটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাড়ে চার লাখ টাকা। প্রতিটি ঘরে পাঁচজন কৃষক তাঁদের পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবেন।বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের করমচাঁদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক লুত্ফর রহমানের বাড়ির উঠানের একপাশে তৈরি করা হয়েছে মডেল ঘর। ঘরটিতে তিন স্তরে পেঁয়াজ রাখা হয়েছে।কৃষক লুত্ফর রহমান বলেন, ‘আমি এ বছর ৬০০ মণ পেঁয়াজ পেয়েছি। সব একসঙ্গে বিক্রি করা সম্ভব না। এ জন্য নিজের সাধ্যমতো সংরক্ষণ করি।কিন্তু এক-দেড় মাস পরই পেঁয়াজ পচে নষ্ট হতে থাকে। আমরা টিনের ঘরে মাচা করে রাখি। তাই গরমে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এই মডেল ঘরও টিনের হলেও বিশেষভাবে তৈরি। ঘরটিতে আলো-বাতাস প্রবেশ করে। আবার ফ্যানের ব্যবস্থাও আছে। এ থেকে এখনই বোঝা যাচ্ছে এখানে পেঁয়াজ রাখলে পচবে না।’একই গ্রামের কৃষক আলিমুজ্জামান মডেল ঘর দেখতে লুত্ফর রহমানের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বললেন, ‘আমাদের প্রধান অর্থকরী ফসলই পেঁয়াজ। কিন্তু তা সংরক্ষণ করা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় থাকি। নিজেদের মতো করে রাখি। দেখা যায় কয়েক মাস পর ৩০ শতাংশ পেঁয়াজই নষ্ট হয়ে গেছে।’

আলিমুজ্জামান মডেল ঘর দেখে খুশি। জানালেন, আগামী বছর নিজেই এ রকম পেঁয়াজ সংরক্ষণের ঘর তৈরি করার কথা ভাবছেন তিনি। কালুখালী উপজেলায় খবর নিয়ে জেনেছেন, যাঁরা গত বছর এ রকম ঘরে পেঁয়াজ রেখেছিলেন তাঁদের কারোরটাই নষ্ট হয়নি। সাত থেকে আট মাস পেঁয়াজ ভালো ছিল।’ লুত্ফর রহমান ও আলিমুজ্জামানসহ গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, সরকার এই মডেল ঘর গ্রামে গ্রামে বেশি করে তৈরি করে দিলে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না।

মডেল ঘর পেঁয়াজ সংরক্ষণের

রাজবাড়ী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা মো. রাজীব খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য এই ঘরগুলো দেখে চাষিরা নিজেরা এমন মডেল ঘর তৈরি করে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করবে। বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩০টি ঘরের মধ্যে ১৫টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেখানে কৃষকরা পেঁয়াজ তুলে রেখেছেন। বাকি ১৫টি ঘরের কাজ কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হবে। আগামী অর্থবছরে আমরা পাংশা উপজেলায় ৩০টি ঘর নির্মাণ করব।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দশমবারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নীতিশ কুমার

মডেল ঘর পেঁয়াজ সংরক্ষণের

আপডেট সময় ১১:০৬:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

অনলাইন নিউজ-

পেঁয়াজ চাষের জন্য রাজবাড়ী জেলার সুনাম আছে। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৪ শতাংশই উৎপাদিত হয় এই জেলায়। তবে কৃষকরা সব সময় ভালো দাম পান না। নানা কারণে দামের ওঠানামা চলে।মৌসুমের শেষ দিকে পেঁয়াজের দাম থাকে কিছুটা কম। তখন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারলে কৃষক পরে বিক্রি করে ভালো দাম পেতে পারেন। কিন্তু জায়গা বা সুবিধার অভাবে অনেক কৃষকই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেন না। নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাঁদের কম দামে হলেও পাইকারকে পেঁয়াজ দিয়ে দিতে হয়।

কৃষিসংশ্লিষ্টরা বলেন, সঠিক সংরক্ষণের অভাবে প্রতিবছর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়। কৃষকদের এই সমস্যা সমাধানে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রাজবাড়ীতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য ‘মডেল ঘর’ নির্মাণ করে দিচ্ছে।কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রাজবাড়ী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কালুখালী উপজেলায় ২০টি পেঁয়াজ সংরক্ষণের মডেল ঘর নির্মাণ করা হয়। চলতি অর্থবছরে বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।এর মধ্যে ১৫টি ঘরে কৃষকরা পেঁয়াজ রাখা শুরু করেছেন। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট গবেষণা করে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণের জন্য এই মডেল ঘরের নকশা বানিয়েছে।কৃষকদের বাড়ির উঠানে ১ শতাংশ জমিতে টিন, বাঁশ, লোহা ও কংক্রিটের সমন্বয়ে বানানো এই ঘরে তিন স্তরের মাচা রয়েছে। ঘরের নিচে আলো-বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পেছনে দেওয়া হয়েছে ছয়টি তাপনিয়ন্ত্রণ ফ্যান।ঝড়-বৃষ্টি থেকে পেঁয়াজ রক্ষা করতে চারপাশে রাখা হয়েছে ত্রিপল। প্রতিটি মডেল ঘরে ৩০০ মণ করে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে। এসব ঘরে পেঁয়াজ ছয় থেকে ৯ মাস ভালো থাকবে।

একেকটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাড়ে চার লাখ টাকা। প্রতিটি ঘরে পাঁচজন কৃষক তাঁদের পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবেন।বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের করমচাঁদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক লুত্ফর রহমানের বাড়ির উঠানের একপাশে তৈরি করা হয়েছে মডেল ঘর। ঘরটিতে তিন স্তরে পেঁয়াজ রাখা হয়েছে।কৃষক লুত্ফর রহমান বলেন, ‘আমি এ বছর ৬০০ মণ পেঁয়াজ পেয়েছি। সব একসঙ্গে বিক্রি করা সম্ভব না। এ জন্য নিজের সাধ্যমতো সংরক্ষণ করি।কিন্তু এক-দেড় মাস পরই পেঁয়াজ পচে নষ্ট হতে থাকে। আমরা টিনের ঘরে মাচা করে রাখি। তাই গরমে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এই মডেল ঘরও টিনের হলেও বিশেষভাবে তৈরি। ঘরটিতে আলো-বাতাস প্রবেশ করে। আবার ফ্যানের ব্যবস্থাও আছে। এ থেকে এখনই বোঝা যাচ্ছে এখানে পেঁয়াজ রাখলে পচবে না।’একই গ্রামের কৃষক আলিমুজ্জামান মডেল ঘর দেখতে লুত্ফর রহমানের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বললেন, ‘আমাদের প্রধান অর্থকরী ফসলই পেঁয়াজ। কিন্তু তা সংরক্ষণ করা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় থাকি। নিজেদের মতো করে রাখি। দেখা যায় কয়েক মাস পর ৩০ শতাংশ পেঁয়াজই নষ্ট হয়ে গেছে।’

আলিমুজ্জামান মডেল ঘর দেখে খুশি। জানালেন, আগামী বছর নিজেই এ রকম পেঁয়াজ সংরক্ষণের ঘর তৈরি করার কথা ভাবছেন তিনি। কালুখালী উপজেলায় খবর নিয়ে জেনেছেন, যাঁরা গত বছর এ রকম ঘরে পেঁয়াজ রেখেছিলেন তাঁদের কারোরটাই নষ্ট হয়নি। সাত থেকে আট মাস পেঁয়াজ ভালো ছিল।’ লুত্ফর রহমান ও আলিমুজ্জামানসহ গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, সরকার এই মডেল ঘর গ্রামে গ্রামে বেশি করে তৈরি করে দিলে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না।

মডেল ঘর পেঁয়াজ সংরক্ষণের

রাজবাড়ী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা মো. রাজীব খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য এই ঘরগুলো দেখে চাষিরা নিজেরা এমন মডেল ঘর তৈরি করে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করবে। বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩০টি ঘরের মধ্যে ১৫টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেখানে কৃষকরা পেঁয়াজ তুলে রেখেছেন। বাকি ১৫টি ঘরের কাজ কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হবে। আগামী অর্থবছরে আমরা পাংশা উপজেলায় ৩০টি ঘর নির্মাণ করব।