রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় শিয়াল মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবদুল মমিন (৩৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
আজ শনিবার (১৪ জুন) সকালে উপজেলার মোহনপুর গ্রামের একটি পোলট্রি খামার থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, গত শুক্রবার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে আবদুল মমিন খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। শনিবার সকালে একই গ্রামের ইউসুফ আলীর পোল্ট্রি খামারের পাশে তারের সঙ্গে জড়িয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ পরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। থানায় খবর দেওয়া হলে সকাল ১০ টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
নিহত আবদুল মমিনের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই আবদুল মমিন মানসিক প্রতিবন্ধী। এজন্য বিয়েও করেনি। নিজের মতো করে চলাফেরা করতো, রাতে বাড়িতে থেকে বের হয়ে আর আসেনি। প্রায় রাতেই সে বাড়ি থেকে বের হয়ে আবার চলে আসে। প্রতিবেশি ইউসুফ আলী তার পোল্ট্রি খামারের শিয়াল তাড়ানোর জন্য খোলা তার দিয়ে তাতে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে রাখেন। অবৈধ সংযোগে আটকা পড়ে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
পোল্ট্রি খামারের মালিক ইউসুফ আলী বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে পোল্ট্রি খামারের সঙ্গে জড়িত। ঈদের আগে এলাকায় শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে যায়। প্রতি রাতেই খামারে হামলা করে মুরগি ছিনিয়ে নেয় শিয়াল। এক দিনে ৫০টি মুরগি খামার থেকে শিয়াল মুরগি খেয়ে ফেলেছে। এজন্য খামারের পাশে খোলা তার দিয়ে রাত ১২ টার পর থেকে শিয়াল মারার ফাঁদ পেতে রাখেন। তবে কাজটি ঠিক হয়নি বলে স্বীকার করেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তবে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগ দেখবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বাগমারা জোনাল অফিসের ডিজিএম আসাদুজ্জামান জানান, খামারে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে এভাবে শিয়াল মারার ফাঁদ তৈরি করা বেআইনি। বাগমারায় প্রায় এমন ঘটনা ঘটে। খামারীরা নিজেদের অজ্ঞতার কারণে বিদ্যুতের ভয়ংকর ব্যবহার করে থাকে। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।