টানা ছয় দিনের অচলাবস্থার পর আজ থেকে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবির আন্দোলন, বদলি আদেশ ও ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির মাঝেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণে সম্মত হয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলো।
গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ যৌথভাবে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি এড়াতে তালাবদ্ধ কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মো. মাহবুবর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার ভাষায়, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আমাদেরই সন্তান, তাদের ক্ষতি আমরা চাই না। দুই দিন পিছিয়ে গেলেও এতে শিক্ষাজীবন অচল হবে না। তিনি আরও জানান, আন্দোলন চলমান থাকলেও পরীক্ষাকে সম্পূর্ণভাবে আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
সংগঠন নেতাদের দাবি, ১০ম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে; তবে পরীক্ষার সময় কোনো ধরনের কর্মসূচি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি এবং এখানে শিক্ষকের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি। প্রধান শিক্ষকরা ইতোমধ্যে ১০ম গ্রেডে বেতনভুক্ত হলেও সহকারী শিক্ষকরা রয়েছেন ১৩তম গ্রেডে। দীর্ঘদিন ধরে গ্রেড উন্নীতকরণ, উচ্চতর গ্রেড সমস্যা সমাধানসহ কয়েকটি দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
এর আগে ৮-১২ নভেম্বর শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন দেড় শতাধিক শিক্ষক। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে তারা কর্মস্থলে ফিরে গেলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অগ্রগতি না হওয়ায় আবার কর্মবিরতিতে ফেরেন।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা আজ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে। তবে ১ ডিসেম্বর থেকেই তা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

ডিজিটাল রিপোর্ট 
























