ময়মনসিংহ , শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

সাজেকে পানি সংকট চরমে

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ০৯:৩২:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • ৫৮ বার পড়া হয়েছে

অনিন্দ্য সুন্দর রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার পর্যটন নগরী সাজেকে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। যে কোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে হোটেল-মোটেল-কটেজ। পানি সংকটের কারণে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পর্যটন ব্যবসায়ীরা কঠিন সময় পার করছেন।

মূলত এখনো বৃষ্টি না হওয়ায় এ এলাকার ঝিরি, ঝরনার পানি শুকিয়ে গেছে। ঝিরি-ঝরনা এ এলাকার পানির প্রধান উৎস।

এ দুর্গম এলাকার বাসিন্দা এবং হোটেল-মোটেলের মালিকরা ঝিরি-ঝরনার পানি দিয়ে তাদের নিত্য প্রয়োজন মিটিয়ে থাকেন। পর্যটন ভিত্তিক পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত এ অঞ্চলটিতে বিকল্প কোনো পানি ব্যবস্থা থাকায় এ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, প্রকৃতির সঙ্গে আমরা যেমন আচরণ করছি প্রকৃতিও আমাদের সঙ্গে তেমন আচরণ করছে। অনেক বছর ধরে জুম চাষের নামে প্রতিদিন সাজেকের কোনো না কোনো পাহাড়ের গাছ-পালা কেটে বন উজার করে আগুন দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া এ অঞ্চলে অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কেটে বন উজার করে যেখানে সেখানে হোটেল-মোটেল-কটেজ নির্মাণ করায় পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে পাহাড়ের ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে যাচ্ছে, জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। এমন কর্মকাণ্ডে প্রকৃতি ভবিষ্যতে আরও ভয়ংকর আচরণ করবে।

সাজেক পানি পরিবহন গাড়ির লাইনম্যান বিনিময় চাকমা বলেন, সাজেকে যথা সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় ঝিরি-ঝরনার পানি শুকিয়ে গেছে। যে কারণে পানি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয়রা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

পানি পরিবহনের লাইনম্যান আরও বলেন, সাজেক ভ্যালি থেকে ২১ কিলোমিটার দূরের মাচালং এলাকার কাচালং নদী থেকে দেড় হাজার লিটার পানি আনতে পরিবহন খরচ পড়ছে আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু এভাবে তো পানির চাহিদা পূরণ করা যাবে না। পানি সংকট দীর্ঘদিন থাকলে পুরো এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে কাজ করা কাচালং সরকারি কলেজের শিক্ষক আবুল ফজল বলেন, জুম চাষের নামে পাহাড়ের গাছ-পালা কেটে বন উজার করে আগুন লাগানো পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। এভাবে যদি পাহাড়ের ওপর অত্যাচার করা হয় তাহলে আমাদের জন্য সামনে ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে।

তিনি অবিলম্বে পরিবেশগত বিপদ এড়াতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন।

শিক্ষক আবুল ফজল আরও বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। স্থানীয় মানুষদের সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। পাহাড়ের গাছ-পালা উজার হওয়ার কারণে আজ সাজেকে পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, সাজেকে পানি সংকটের বিষয়টি শুনেছি। পানি সংকট দূর করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিকল্প পানির উৎস সন্ধান করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাজেকে পানি সংকট চরমে

আপডেট সময় ০৯:৩২:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

অনিন্দ্য সুন্দর রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার পর্যটন নগরী সাজেকে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। যে কোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে হোটেল-মোটেল-কটেজ। পানি সংকটের কারণে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পর্যটন ব্যবসায়ীরা কঠিন সময় পার করছেন।

মূলত এখনো বৃষ্টি না হওয়ায় এ এলাকার ঝিরি, ঝরনার পানি শুকিয়ে গেছে। ঝিরি-ঝরনা এ এলাকার পানির প্রধান উৎস।

এ দুর্গম এলাকার বাসিন্দা এবং হোটেল-মোটেলের মালিকরা ঝিরি-ঝরনার পানি দিয়ে তাদের নিত্য প্রয়োজন মিটিয়ে থাকেন। পর্যটন ভিত্তিক পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত এ অঞ্চলটিতে বিকল্প কোনো পানি ব্যবস্থা থাকায় এ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, প্রকৃতির সঙ্গে আমরা যেমন আচরণ করছি প্রকৃতিও আমাদের সঙ্গে তেমন আচরণ করছে। অনেক বছর ধরে জুম চাষের নামে প্রতিদিন সাজেকের কোনো না কোনো পাহাড়ের গাছ-পালা কেটে বন উজার করে আগুন দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া এ অঞ্চলে অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কেটে বন উজার করে যেখানে সেখানে হোটেল-মোটেল-কটেজ নির্মাণ করায় পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে পাহাড়ের ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে যাচ্ছে, জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। এমন কর্মকাণ্ডে প্রকৃতি ভবিষ্যতে আরও ভয়ংকর আচরণ করবে।

সাজেক পানি পরিবহন গাড়ির লাইনম্যান বিনিময় চাকমা বলেন, সাজেকে যথা সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় ঝিরি-ঝরনার পানি শুকিয়ে গেছে। যে কারণে পানি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয়রা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

পানি পরিবহনের লাইনম্যান আরও বলেন, সাজেক ভ্যালি থেকে ২১ কিলোমিটার দূরের মাচালং এলাকার কাচালং নদী থেকে দেড় হাজার লিটার পানি আনতে পরিবহন খরচ পড়ছে আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু এভাবে তো পানির চাহিদা পূরণ করা যাবে না। পানি সংকট দীর্ঘদিন থাকলে পুরো এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে কাজ করা কাচালং সরকারি কলেজের শিক্ষক আবুল ফজল বলেন, জুম চাষের নামে পাহাড়ের গাছ-পালা কেটে বন উজার করে আগুন লাগানো পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। এভাবে যদি পাহাড়ের ওপর অত্যাচার করা হয় তাহলে আমাদের জন্য সামনে ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে।

তিনি অবিলম্বে পরিবেশগত বিপদ এড়াতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন।

শিক্ষক আবুল ফজল আরও বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। স্থানীয় মানুষদের সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। পাহাড়ের গাছ-পালা উজার হওয়ার কারণে আজ সাজেকে পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, সাজেকে পানি সংকটের বিষয়টি শুনেছি। পানি সংকট দূর করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিকল্প পানির উৎস সন্ধান করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।