ময়মনসিংহ , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

রমজানে চাহিদা বেড়েছে কুমিল্লায় হাতে ভাজা মুড়ির

  • বাবু চৌধুরী
  • আপডেট সময় ০১:৩৯:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪
  • ২১৬ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন সংবাদ: রমজান মাসকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার মুড়ির গ্রামে ব্যস্ততা বেড়েছে। কুমিল্লার বরুড়ার উপজেলার লক্ষীপুর গ্রাম। এ গ্রামে চলছে রমজান মাসের জন্য মুড়ি ভাজার ব্যস্ততা। এ গ্রামে শত বছর ধরে মুড়ি ভাজা হয়। হাতে ভাজা মুড়ির জন্য এ গ্রাম প্রসিদ্ধ। কাঠের চুলা জ্বালিয়ে মুড়ি ভাজছেন নারীরা। কেউ মুড়ি চালুন দিয়ে পরিস্কার করছেন। পুরুষরা মুড়ি বস্তায় ভরে মুখ সেলাই করছেন।

বৃহস্প্রতিবার সকাল ৮টায় লক্ষীপুর গ্রামের রঞ্জিত পালের বাড়িতে এ দৃশ্য দেখা যায়।

রমজান মাস আসলেই কারোর সাথে কথা বলার সুযোগ নেই। পরিবারের ছেলে বুড়ো সবাই ব্যস্ত। গ্রামের পাশে পিকাপ ভ্যানে ও ট্রাকে তুলে দেয়া হচ্ছে মুড়ির বস্তা। সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেটে। রঞ্জিত পাল বাসসকে বলেন, তারা সারা বছর মুড়ি ভাজেন। হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা রয়েছে। হাতে ভাজা মুড়িতে শুধু লবণ পানি দেয়া হয়। এগুলো খেতেও সুস্বাদু। দাম একটু বেশি হলেও সচেতন মানুষ হাতে ভাজা মুড়িই বেশি খোঁজ করেন।

কুমিল্লায় আগে বরুড়ার রামমোহন বাজার সংলগ্ন গোপালনগর ও দাদিসারে বেশি মুড়ি ভাজা হতো। সেখানে এখন মুড়ি ভাজা কমে এসেছে। শুধু লক্ষীপুরে বেশি ভাজা হয়। রোজার সময় তাদের মুড়ির চাহিদা বেশি। তাই ব্যস্ততাও বেশি। তারা এখন গিগজ ধানের মুড়ি ভাজছেন। আরো পরে ভাজবেন টাবি ধানের মুড়ি। সুব্রত পাল জানান, গিগজ ও টাপি এ দুই রকমের চাল দিয়ে মুড়ি ভাজা হয়।

জানা যায়, জেলার লাকসামের বিজরা বাজার ও লালমাই উপজেলার বিজয়পুর বাজার থেকে এই দুই ধরনের চাল কিনে আনা হয়। তিনি বলেন, আমরা পাইকারদের কাছে ৫০ কেজির এক বস্তা বিক্রি করি প্রায় চার হাজার টাকায়। তারা এসে ট্রাক বা পিকআপভ্যানে করে মুড়ি নিয়ে যায়।

ওই বাড়ির আরেক মুড়ি উৎপাদনকারী লক্ষী বর্মণ পাল বাসসকে বলেন, গ্রামের ৫০ পরিবার প্রতিদিন প্রায় ৯০ বস্তা মুড়ি ভাজেন। প্রতি বসায় ৪৫ কেজি মুড়ি থাকে। তারা পাইকারি প্রতি কেজি ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা বিক্রি করেন। খুচরা বাজারে তা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

কুমিল্লার চকবাজারের এক মুড়ি ব্যবসায়ী জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরেই লক্ষ্মীপুর গ্রাম থেকে মুড়ি আনি। আমার কিছু নির্দিষ্ট ক্রেতা আছে, হাতে ভাজা মুড়ি কেনার। এ ছাড়া এখনও মেশিনে তৈরি মুড়ির তুলনায় হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা ভালো।

লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান এর মতে, এখন হাতে ভাজা মুড়ি তেমন পাওয়া যায় না। তবে তাদের বাবা-দাদারাও এই কাজ করতেন। তারাও এই পেশায় নিয়োজিত আছে। একদম বিশুদ্ধ হাতে ভাজা মুড়ি তারা উৎপাদন করে। আমি অবশ্যই তাদের এই কাজ অব্যাহত রাখতে যা যা করা যায় করবো।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

Admin

doinikmatiomanuss.com

রমজানে চাহিদা বেড়েছে কুমিল্লায় হাতে ভাজা মুড়ির

আপডেট সময় ০১:৩৯:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

অনলাইন সংবাদ: রমজান মাসকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার মুড়ির গ্রামে ব্যস্ততা বেড়েছে। কুমিল্লার বরুড়ার উপজেলার লক্ষীপুর গ্রাম। এ গ্রামে চলছে রমজান মাসের জন্য মুড়ি ভাজার ব্যস্ততা। এ গ্রামে শত বছর ধরে মুড়ি ভাজা হয়। হাতে ভাজা মুড়ির জন্য এ গ্রাম প্রসিদ্ধ। কাঠের চুলা জ্বালিয়ে মুড়ি ভাজছেন নারীরা। কেউ মুড়ি চালুন দিয়ে পরিস্কার করছেন। পুরুষরা মুড়ি বস্তায় ভরে মুখ সেলাই করছেন।

বৃহস্প্রতিবার সকাল ৮টায় লক্ষীপুর গ্রামের রঞ্জিত পালের বাড়িতে এ দৃশ্য দেখা যায়।

রমজান মাস আসলেই কারোর সাথে কথা বলার সুযোগ নেই। পরিবারের ছেলে বুড়ো সবাই ব্যস্ত। গ্রামের পাশে পিকাপ ভ্যানে ও ট্রাকে তুলে দেয়া হচ্ছে মুড়ির বস্তা। সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেটে। রঞ্জিত পাল বাসসকে বলেন, তারা সারা বছর মুড়ি ভাজেন। হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা রয়েছে। হাতে ভাজা মুড়িতে শুধু লবণ পানি দেয়া হয়। এগুলো খেতেও সুস্বাদু। দাম একটু বেশি হলেও সচেতন মানুষ হাতে ভাজা মুড়িই বেশি খোঁজ করেন।

কুমিল্লায় আগে বরুড়ার রামমোহন বাজার সংলগ্ন গোপালনগর ও দাদিসারে বেশি মুড়ি ভাজা হতো। সেখানে এখন মুড়ি ভাজা কমে এসেছে। শুধু লক্ষীপুরে বেশি ভাজা হয়। রোজার সময় তাদের মুড়ির চাহিদা বেশি। তাই ব্যস্ততাও বেশি। তারা এখন গিগজ ধানের মুড়ি ভাজছেন। আরো পরে ভাজবেন টাবি ধানের মুড়ি। সুব্রত পাল জানান, গিগজ ও টাপি এ দুই রকমের চাল দিয়ে মুড়ি ভাজা হয়।

জানা যায়, জেলার লাকসামের বিজরা বাজার ও লালমাই উপজেলার বিজয়পুর বাজার থেকে এই দুই ধরনের চাল কিনে আনা হয়। তিনি বলেন, আমরা পাইকারদের কাছে ৫০ কেজির এক বস্তা বিক্রি করি প্রায় চার হাজার টাকায়। তারা এসে ট্রাক বা পিকআপভ্যানে করে মুড়ি নিয়ে যায়।

ওই বাড়ির আরেক মুড়ি উৎপাদনকারী লক্ষী বর্মণ পাল বাসসকে বলেন, গ্রামের ৫০ পরিবার প্রতিদিন প্রায় ৯০ বস্তা মুড়ি ভাজেন। প্রতি বসায় ৪৫ কেজি মুড়ি থাকে। তারা পাইকারি প্রতি কেজি ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা বিক্রি করেন। খুচরা বাজারে তা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

কুমিল্লার চকবাজারের এক মুড়ি ব্যবসায়ী জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরেই লক্ষ্মীপুর গ্রাম থেকে মুড়ি আনি। আমার কিছু নির্দিষ্ট ক্রেতা আছে, হাতে ভাজা মুড়ি কেনার। এ ছাড়া এখনও মেশিনে তৈরি মুড়ির তুলনায় হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা ভালো।

লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান এর মতে, এখন হাতে ভাজা মুড়ি তেমন পাওয়া যায় না। তবে তাদের বাবা-দাদারাও এই কাজ করতেন। তারাও এই পেশায় নিয়োজিত আছে। একদম বিশুদ্ধ হাতে ভাজা মুড়ি তারা উৎপাদন করে। আমি অবশ্যই তাদের এই কাজ অব্যাহত রাখতে যা যা করা যায় করবো।