রংপুরের মিঠাপুকুরে তদন্ত ছাড়াই সাজানো মামলায় দুই সহোদরকে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ছয় জনকে আসামি করে মামলা দায়ের শেষে দুইভাইকে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করার অভিযোগ উঠেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং বাদীর বিরুদ্ধে।
মামলার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে ভুক্তভোগীরা ইতিমধ্যে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি,রংপুর জেলা পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) সহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- মিঠাপুকুর উপজেলার ০২ নং রানীপুকুর ইউনিয়নের বলদিপুকুর তাজনগর গ্রামে তাদের বাড়ি।
বাড়ির চলাচলের রাস্তা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে সাবেক চেয়ারম্যান প্রতিবেশী মোঃ শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে তাদের মত-বিরোধ চলে আসছিলো।
ঘটনার দিন-(১২ মার্চ) উভয়ে উভয়ের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করা নিয়ে সামান্য একটু তর্কাতর্কি হলে পরে রানীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবু ফরহাদ পুটু এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়।
কিন্তু বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান হওয়ার পরেও শাহাদাত আলী তার পুত্র আইনজীবী হওয়ায় রংপুর আদালতে একটি মিস পিটিশন দায়ের করেন, যাহার নম্বর ৩০/২৪ তারিখ ১২/৩/২৪ ইং।
এদিকে হঠাৎ ১৯ মার্চ -রাত এক টার সময় মিঠাপুকুর থানা পুলিশের এসআই এবং রানীপুকুর ইউনিয়ন বিট অফিসার, মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ছাদেক আলীর বাড়ি ঘেরাও করে ছাদেক আলীর পুত্র ইটভাটা শ্রমিক নজরুল এবং নুর মোহাম্মাদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাদেক আলী সহ অন্যদের বলে যায়, মানবিক কারণে অন্যদের গ্রেফতার করা হলোনা। আসামিদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়ে মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করেছেন।
১৯ মার্চ দুই সহোদরকে রংপুর কোর্টে প্রেরণ করা হলে মামলার নথিপত্র তুলে ভুক্তভোগীরা দেখতে পায়, মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ্য আছে ঘটনার দিন ১৩ মার্চ বিবাদীরা উক্ত মামলার বাদী শাহাদাত আলীকে তাঁর সার এবং কীটনাশক দোকানে যাওয়ার পথে পথরোধ করে মারডাং করে কোমর এবং পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে ফেলেন এবং মারাত্মক কাটা ফুলা জখম করেন।
এমনকি বিবাদীরা তার পকেট থেকে ব্যবসার ৭৫০০০/ টাকা জোরপূর্বক কেঁড়ে নিয়েছেন।
যাহার মামলা নং-৩০/১২৬ ধারা-১৪৩/৪৪৭/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড।
সরেজমিন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,এই মামলায় যেসব বিষয় উল্লেখ্য করা হয়েছে তাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।
মারামারি তো দুরের কথা এই সংক্রান্ত বিষয়ে সেইদিন কোন রকমের কথা কাটাকাটি কিংবা বাদী বিবাদীর মধ্যে অসৌজন্যমূলক আচরণও তাদের চোখে পড়েনি।
তাদের দাবি, এই মামলার বাদী প্রভাবশালী এবং তার ভাই রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে পুলিশকে প্রভাবিত করে এই মামলা দায়ের করেছেন। এমনকি তাঁর ছেলে একজন আইনজীবী এবং ভাতিজা মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইন্টার্নী করায় মেডিকেল রিপোর্ট সহ আদালত পর্যন্ত হয়রানি করতে যা করা সম্ভব তা সব করবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই-মোস্তফা কামালকে ঘটনার বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, আমি সবেমাত্র নতুন যোগদান করেছি।
পূর্বের (ওসি) মামলাটি নিয়েছিলেন। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন হবে।
এ বিষয়ে এএসপি (ডি-সার্কেল) আবু হাসান মিয়া জানান, একটি অভিযোগ পেয়েছি।
বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এবিষয়ে অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।i

মাটি মামুন , রংপুর 



















