বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম মারা গেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব নারী বীরত্বের সঙ্গে রণাঙ্গনে লড়াই করে সাহসিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম সখিনা বেগম। সখিনা বেগম যুদ্ধের সময় দা দিয়ে কুপিয়ে পাঁচ রাজাকারকে হত্যা করেছিলেন।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর ৫টার দিকে বার্ধক্যের কারণে বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়ার বড়মাইপাড়া এলাকায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
এই নারী মুক্তিযোদ্ধাকে শেষ বয়সে দেখাশোনা করতেন তার ভাগনি ফাইরুন্নেছা আক্তার। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিকেলে আসরের নামাজ শেষে নিকলী উপজেলার গুরুই মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে গুরুই এলাকার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কয়েকটি বই থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধে সখিনা বেগমের ভাগনে মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে হানাদার পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের হাতে শহিদ হন। ভাগনের অকালমৃত্যু সখিনাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে।
ওই সময় সখিনা বেগম গুরুই এলাকায় ‘বসু বাহিনীর’ নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রাঁধুনির কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে রাজাকারদের গতিবিধির বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন। একপর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। আসার সময় সেখান থেকে তিনি একটি ধারালো দা নিয়ে আসেন। পরে সেই দা দিয়ে নিকলীর পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে মারেন। সেই দা বর্তমানে ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে এবং নামফলকে সখিনা বেগমের নাম উল্লেখ আছে।