ময়মনসিংহ , শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
জুলাই সনদ যেন প্রতারণার বস্তুতে পরিণত না হয় বললেন আখতার বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই বললেন সাদিক রাজনৈতিক বিভেদে ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন ঘটলে জাতি ক্ষমা করবে না বললেন সালাহউদ্দিন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ফিল্ডিং করছিলেন, আচমকা মাঠেই লুটিয়ে পড়েন প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে গম আসছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকালে কোনো দুর্নীতি করিনি বললেন ধর্ম উপদেষ্টা মির্জা ফখরুলের আহ্বান নির্বাচনে সব দলকে অংশ নেওয়ার ৪ দেশের বিশেষজ্ঞ টিম বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনা তদন্তে আসছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার হলে জামায়াতের হবে না কেন বললেন মাসুদ কামাল প্রভাসের ‘ফৌজি’, বাংলা ভাষাতেও মুক্তি পাবে
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

জুলাই বিপ্লব সফলতার নেপথ্য কাহিনী : সাদিক কায়েম

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম ২০২৪ সালের ‘জুলাই বিপ্লব’ বা ‘লাল জুলাই’–এর নেপথ্য কাহিনী তুলে ধরেন। তার মতে, এই আন্দোলন ছিল আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ। সাদিক কায়েম জানান, এই বিপ্লব ছিল বছরের পর বছর ধরে চলা নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফল।

সাদিক কায়েম বলেন, সরকারবিরোধী বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও স্বাধীন চিন্তার তরুণরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হন। এই প্ল্যাটফর্ম থেকেই মূলত আন্দোলনের বিস্তার ঘটে। দলীয় বিভক্তি ও বিভাজন কাটিয়ে সকলে একসাথে কাজ করার দৃঢ় সংকল্প ছিল আন্দোলনের প্রাণশক্তি।

সাদিক জানান, সরকার যখন আন্দোলন দমন করতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়, তখন আন্দোলনকারীরা বিকল্প উপায়ে যোগাযোগ চালিয়ে যান— পুরনো ধাঁচের বাটন ফোন, সিমকার্ড ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন তারা। ‘কো-অর্ডিনেটর’ নামক নেতৃত্ব কাঠামো গড়ে তোলা হয়, যেখানে সভাপতি বা সম্পাদক না থাকলেও, সকলে দায়িত্ব ভাগ করে নেন। এভাবেই আন্দোলনকে নেতৃত্বহীন করে তোলার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়।

সাদিক কায়েম বলেন, এই বিপ্লব কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক আন্দোলন ছিল না; এতে যুক্ত হয়েছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষ, ধর্মীয় গোষ্ঠী এমনকি পরিবারের সদস্যরাও। রাস্তায় নেমেছিলেন সবাই। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হল থেকে উৎখাত করার ঘটনাগুলো ছিল আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ মোড়। যারা আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ পুরো জাতিকে নাড়া দেয়।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে একটি দাবিনামা তৈরি করে তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সাদিক জানান, এসব দাবির মধ্যে ছিল বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, দমনমূলক আইনের বাতিলসহ রাজনৈতিক সংস্কারের স্পষ্ট রূপরেখা।

শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার পতনের মধ্য দিয়ে এই বিপ্লব সফল হয়। গঠিত হয় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সাদিক কায়েম বলেন, এখন সময় নতুন বাংলাদেশ গঠনের। তবে তিনি সতর্ক করে দেন— যদি আমরা আবার দলাদলিতে জড়িয়ে পড়ি বা ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দিই,

সাদিক কায়েম বলেন, “এই বিপ্লব ছিল আমাদের তরুণ প্রজন্মের প্রতিজ্ঞার ফল। একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার পথে প্রথম পদক্ষেপ। আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধ থেকে এই পথেই এগিয়ে যেতে হবে।”

সাদিক কায়েমের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘জুলাই বিপ্লব’ শুধু সরকারের পতনের গল্প নয়, এটি একটি প্রজন্মের স্বপ্ন, সাহস, ও আত্মত্যাগের ইতিহাস।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জুলাই সনদ যেন প্রতারণার বস্তুতে পরিণত না হয় বললেন আখতার

জুলাই বিপ্লব সফলতার নেপথ্য কাহিনী : সাদিক কায়েম

আপডেট সময় ১০:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম ২০২৪ সালের ‘জুলাই বিপ্লব’ বা ‘লাল জুলাই’–এর নেপথ্য কাহিনী তুলে ধরেন। তার মতে, এই আন্দোলন ছিল আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ। সাদিক কায়েম জানান, এই বিপ্লব ছিল বছরের পর বছর ধরে চলা নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফল।

সাদিক কায়েম বলেন, সরকারবিরোধী বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও স্বাধীন চিন্তার তরুণরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হন। এই প্ল্যাটফর্ম থেকেই মূলত আন্দোলনের বিস্তার ঘটে। দলীয় বিভক্তি ও বিভাজন কাটিয়ে সকলে একসাথে কাজ করার দৃঢ় সংকল্প ছিল আন্দোলনের প্রাণশক্তি।

সাদিক জানান, সরকার যখন আন্দোলন দমন করতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়, তখন আন্দোলনকারীরা বিকল্প উপায়ে যোগাযোগ চালিয়ে যান— পুরনো ধাঁচের বাটন ফোন, সিমকার্ড ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন তারা। ‘কো-অর্ডিনেটর’ নামক নেতৃত্ব কাঠামো গড়ে তোলা হয়, যেখানে সভাপতি বা সম্পাদক না থাকলেও, সকলে দায়িত্ব ভাগ করে নেন। এভাবেই আন্দোলনকে নেতৃত্বহীন করে তোলার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়।

সাদিক কায়েম বলেন, এই বিপ্লব কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক আন্দোলন ছিল না; এতে যুক্ত হয়েছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষ, ধর্মীয় গোষ্ঠী এমনকি পরিবারের সদস্যরাও। রাস্তায় নেমেছিলেন সবাই। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হল থেকে উৎখাত করার ঘটনাগুলো ছিল আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ মোড়। যারা আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ পুরো জাতিকে নাড়া দেয়।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে একটি দাবিনামা তৈরি করে তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সাদিক জানান, এসব দাবির মধ্যে ছিল বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, দমনমূলক আইনের বাতিলসহ রাজনৈতিক সংস্কারের স্পষ্ট রূপরেখা।

শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার পতনের মধ্য দিয়ে এই বিপ্লব সফল হয়। গঠিত হয় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সাদিক কায়েম বলেন, এখন সময় নতুন বাংলাদেশ গঠনের। তবে তিনি সতর্ক করে দেন— যদি আমরা আবার দলাদলিতে জড়িয়ে পড়ি বা ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দিই,

সাদিক কায়েম বলেন, “এই বিপ্লব ছিল আমাদের তরুণ প্রজন্মের প্রতিজ্ঞার ফল। একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার পথে প্রথম পদক্ষেপ। আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধ থেকে এই পথেই এগিয়ে যেতে হবে।”

সাদিক কায়েমের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘জুলাই বিপ্লব’ শুধু সরকারের পতনের গল্প নয়, এটি একটি প্রজন্মের স্বপ্ন, সাহস, ও আত্মত্যাগের ইতিহাস।