পুলিশের সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদের সাভানা পার্ক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
সোমবার (১০ জুন) পার্কের প্রধান ফটকে টাঙানো হয়েছে ক্রোক বিজ্ঞপ্তি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গোপালগঞ্জের উপ পরিচালক মো. মশিউর রহমান পার্কের ফটকের সামনে একটি ক্রোক বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দেন। বিজ্ঞপ্তিতে সাভানা পার্কে কি কি মালামাল ক্রোক করা হয়েছে তার লিপিবদ্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন,‘দুর্নীতি দমন কমিশনে দায়েরকৃত মামলার স্পেশাল জজের আদেশে সাভানা ইকো রিসোর্টের যাবতীয় কৃষিজমি, পুকুর জলাশয়সহ যা আছে তার সব ক্রোক করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমির) সহযোগিতায় আমরা এই ক্রোম আদেশটি জারি করেছি। জেলা প্রশাসক হিসেবে আমি দেখতে এসেছি। যে জায়গাটায় আমি সহযোগিতা দিব সেই জায়গাটি ঘুরে দেখলাম। কি কি সুযোগ সুবিধা আছে তার ধারণা নিলাম। এটা শুধু ক্রোক নয় এটা রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এই রিসোর্টকে সচল করবো। এখানে ফলগাছ, পুকুর, কটেজ ও বিভিন্ন রাইড রয়েছে। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে কিভাবে এইসব ব্যবহার উপযোগী করা যায় এবং মানুষ এসে এখানে চিত্তবিনোদন করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অচিরেই এই পার্কটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
এর আগে আদালতের নির্দেশে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে অভিযুক্ত পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে গোপালগঞ্জে করা সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে রিসিভার নিয়োগ প্রাপ্তির পরে পার্ক পরিদর্শনে করেন গোপালগেঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম-এর নেতৃত্বে দুদক এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল। সোমবার দুপুরে এই প্রতিনিধি দলটি পার্কটির ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)ফারহানা জাহান উপমা, দুদক গোপালগঞ্জের উপপরিচালক মো: মশিউর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দিন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা- বিজন নন্দী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) সনজয় কুমার কুন্ড, সহকারী কমিশনার মো. সেবগাতুল্যাহ, রোন্টি পোদ্দার, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা মৎস্য অফিসার সোহেল মো. জিল্লুর রহমান রিগানসহ সরকারি অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত শুক্রবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দু’টি দল পার্কে অবস্থান নেয়। পরে পার্কের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বেনজীর ও তার পরিবারের মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের নিয়ন্ত্রণ বুঝে নেয়। ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে পার্কের প্রধান ফটকের সামনে মাইকিং করে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজ বাবলী শবনব। এর ফলে পরের দিন শনিবার (৮জুন) থেকে সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর এই দুই জেলার জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় চলবে। ২০১৫ থেকে ২০২০ সালে র্যাবের মহাপরিচালক এবং ২০২০ সাল থেকে থেকে ২০২২ পর্যন্ত আইজিপি থাকাকালীন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল গ্রামে প্রায় ৬২১ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক।
আরো পড়ুন…..