টানা চার দিন প্রস্তাবিত সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তি আবেদনের শুনানি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পর্যালোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। গতকাল বুধবার বিকালে নির্বাচন ভবনে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে চার দিনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সচিব বলেছেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আসনগুলোর সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার কমিশনার, ইসি সচিব ও সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত বিশেষায়িত কমিটি কাজ করে, তারপর ৩০০ আসনের সীমানার খসড়া ৩০ জুলাই প্রকাশ করে ইসি। এরপর দাবি-আপত্তি জানাতে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
এর আগে গতকাল বেলা ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪, সিরাজগঞ্জ-২, ৫, ৬, পাবনা-১ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করেন ইসি। শুনানিতে সংসদীয় আসনের সীমানার দাবি ও আপত্তি নিয়ে আবেদনকারী ও তাদের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানি করেন। দাবি ও আপত্তি বিষয়ে ইসি উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনছেন এবং আইন ও বিধি অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন।
শুনানি শেষে পাবনার প্রতিনিধি ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন বলেন, আমরা শুধুমাত্র সাঁথিয়া উপজেলা নিয়ে পাবনা-১ আসন চাই। একই সঙ্গে বেড়া ও সুজানগর নিয়ে পাবনা-২ আসন চাই। এই দুটি আসন বিন্যাসের প্রস্তাবনা ২০১৮ সালে ছিল কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জের প্রতিনিধি আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলায় ২০০১ সাল পর্যন্ত সাতটি আসন ছিল। ২০০৮ সালে একটি আসন কমিয়ে ছয়টি আসন করা হয়। আমাদের দাবি, আগে চৌহালী উপজেলা ও শাহাজাদপুর উপজেলার পূর্ব অঞ্চলের চারটা ইউনিয়ন মিলে যে সিরাজগঞ্জ ছয় আসন ছিল সে আসনটা আমরা ফিরে পেতে চাই। দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ-১, সিলেট-১, ফরিদপুর-১, ৪, মাদারীপুর-২, ৩, শরীয়তপুর-২ ও ৩ আসনের শুনানি গ্রহণ করা হয়।
ফরিদপুর-৪ আসনের প্রতিনিধি কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, ২০০১ সাল পর্যন্ত চরভদ্রাসন ও সদরপুর দুটি উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসন ছিল। কিন্তু ২০০৮ সালে ভাঙ্গা উপজেলা ফরিদপুর-৫ আসন ফরিদপুর-৪ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। আমরা ফরিদপুর-৪ আসন ২০০১ সালের মতো ফিরে পেতে চাই। একই সঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৫ আসন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
টাঙ্গাইল-৬ আসন প্রতিনিধি বলেন, দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলা নিয়ে টাঙ্গাইল-৬ আসন গঠিত। কিন্তু নাগরপুর উপজেলা একটি নদী বেষ্টিত এলাকা তাদের সঙ্গে আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রয়েছে। আমরা দেলদুয়ার উপজেলাকে একক আসন হিসেবে টাঙ্গাইল-৬ আসন করার দাবি জানাচ্ছি। সিলেট-১ আসনের প্রতিনিধি বলেন, সিটি করপোরেশনের ২৫, ২৬, ২৭ ওয়ার্ড সিলেট-১ থেকে কেটে সিলেট-৩ আসনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা এ ওয়ার্ডগুলোকে সিলেট-১ আসনে অন্তর্ভুক্ত রাখার দাবি জানাই।