আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে পরপর দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়েছে। রোববার (৩১ আগস্ট) ৬ মাত্রার প্রথম ভূমিকম্পের পর মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ৫.৫ মাত্রার আরেকটি ভূকম্পন আঘাত হেনেছে, যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে।
প্রথম ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে এবং আহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। হাজার হাজার ঘরবাড়িও ধসে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, দ্বিতীয় ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে, যা আগের কম্পনের কাছাকাছি এলাকায় অনুভূত হয়েছে। এই ভূমিকম্পের কারণে পাহাড় ধসে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ সর্বশেষ তথ্যে জানিয়েছেন যে, ১ হাজার ৪১১ জন নিহত, অন্তত ৩ হাজার ১২৪ জন আহত এবং ৫ হাজার ৪০০-এর বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা আরও মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে যে, হাজারো শিশু ঝুঁকিতে আছে। তারা এরই মধ্যে ওষুধ, গরম কাপড়, তাঁবু, টারপলিন, সাবান, স্যানিটারি পণ্য এবং পানি সরবরাহ শুরু করেছে। উদ্ধারকাজে তালেবান সেনারাও অংশ নিচ্ছে, তবে সীমিত স্বাস্থ্যসেবা এবং বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল দুর্বল অবকাঠামো আফগানিস্তানের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার মানুষ এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আসিলের প্রতিনিধি নূরজাই আরও জানান, হাজার হাজার পরিবার খোলা আকাশের নিচে ভাঙা ঘরের পাশে রাত কাটাচ্ছে এবং ঘন ঘন আফটারশকের ভয় তাদের দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। খাদ্য এবং আশ্রয়ের মতো জরুরি সহায়তা এখন সবচেয়ে বড় চাহিদা।