ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

বহু জাতীয় নেতার ডাকসু থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেক হয়েছে

  • ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নানাভাবে ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (ডাকসু)। এ মঞ্চ থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেক হয়েছে বহু জাতীয় নেতার।

ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ছাত্র সমাজের কণ্ঠস্বর, মুক্তিযুদ্ধ আর গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠায় দ্বিতীয় সংসদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ডাকসুকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ কেবল শতবর্ষী এ বিদ্যাপিঠেরই নয়, ক্যাম্পাসের গণ্ডি পেরিয়ে কখনও কখনও নেতৃত্ব দিয়েছে পুরো দেশের।

১৯২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রথম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয় যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্তকে। পরের বছর মমতাজউদ্দিন আহমেদকে সহ-সভাপতি বা ভিপি ও এ কে মুখার্জীকে সাধারণ সম্পাদক বা জিএস মনোনীত করা হয়।

প্রায় তিন দশক পর ১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নাম করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু। তবে আগের সব ভূমিকা ছাপিয়ে ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে স্বাধিকার-স্বাধীনতা আন্দোলনে অগ্রভাগে থেকে পুরো জাতিকে পথ দেখায় ডাকসু। হয়ে ওঠে জাতীয় রাজনীতির নেতৃত্ব তৈরির কেন্দ্র।

১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নাম করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু।

১৯৭২ সালে স্বাধীনতার পরবর্তী প্রথম ডাকসুর নেতৃত্বে আসেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আর মাহবুব জামান। ১৯৭৩ সালের নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক বিতর্কের পর দীর্ঘ সময় ভোট হয়নি ডাকসুতে। লম্বা বিরতির পর ১৯৭৯ ও ৮০ এর পরপর দুই নির্বাচনে ভিপি-জিএস নির্বাচিত হন যথাক্রমে মাহমুদুর রহমান মান্না ও আখতারুজ্জামান। আগের দুইবারের জিএস আখতারুজ্জামান ১৯৮২ তে নির্বাচিত হন ডাকসুর ভিপি, আর জিএস হন জিয়াউদ্দিন বাবলু। এরপর আবারও ডাকসুতে স্থবিরতা। ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষের নির্বাচনে নেতৃত্বে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ও মুশতাক হোসেন। পরের বছর নির্বাচিত হন আমানউল্লাহ আমান-খায়রুল কবির খোকন জুটি।

ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ছাত্র সমাজের কণ্ঠস্বর, মুক্তিযুদ্ধ আর গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠায় দ্বিতীয় সংসদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ডাকসুকে।

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ পতনের পর দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরলেও অনাস্থার চোরাবালিতে ডুবে যায় ডাকসু। নানা বাধা পেরিয়ে প্রায় তিন দশক পর ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় সবশেষ ডাকসু নির্বাচন। সেবার ছাত্রলীগ একচ্ছত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ পেলেও, সবাইকে চমকে দিয়ে ভিপি নির্বাচিত হন কোটা আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর।

৬ বছর পর এবারের নির্বাচনে অন্যান্য প্রায় সব সংগঠনের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলেও ভোটের লড়াইয়ে নেই সরকার পতনের পর নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগ।

আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ডাকসু এবং হল সংসদে শিক্ষার্থীদের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ ভোটের বিপরীতে ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন। ডাকসুতে ২৮টি পদের জন্য মোট ৪৭১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে ১৮টি হলে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি। এসব পদে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন ১ হাজার ৩৫ জন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে এবার ভোটারদের ৪১টি ভোট দিতে হচ্ছে।

এবারের ডাকসু ভোটে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে অন্তত ১০টি প্যানেল অংশ নিয়েছে। এর বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন প্রার্থীদের আরেকটি অংশ।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বহু জাতীয় নেতার ডাকসু থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেক হয়েছে

আপডেট সময় ১০:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নানাভাবে ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (ডাকসু)। এ মঞ্চ থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেক হয়েছে বহু জাতীয় নেতার।

ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ছাত্র সমাজের কণ্ঠস্বর, মুক্তিযুদ্ধ আর গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠায় দ্বিতীয় সংসদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ডাকসুকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ কেবল শতবর্ষী এ বিদ্যাপিঠেরই নয়, ক্যাম্পাসের গণ্ডি পেরিয়ে কখনও কখনও নেতৃত্ব দিয়েছে পুরো দেশের।

১৯২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রথম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয় যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্তকে। পরের বছর মমতাজউদ্দিন আহমেদকে সহ-সভাপতি বা ভিপি ও এ কে মুখার্জীকে সাধারণ সম্পাদক বা জিএস মনোনীত করা হয়।

প্রায় তিন দশক পর ১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নাম করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু। তবে আগের সব ভূমিকা ছাপিয়ে ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে স্বাধিকার-স্বাধীনতা আন্দোলনে অগ্রভাগে থেকে পুরো জাতিকে পথ দেখায় ডাকসু। হয়ে ওঠে জাতীয় রাজনীতির নেতৃত্ব তৈরির কেন্দ্র।

১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নাম করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু।

১৯৭২ সালে স্বাধীনতার পরবর্তী প্রথম ডাকসুর নেতৃত্বে আসেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আর মাহবুব জামান। ১৯৭৩ সালের নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক বিতর্কের পর দীর্ঘ সময় ভোট হয়নি ডাকসুতে। লম্বা বিরতির পর ১৯৭৯ ও ৮০ এর পরপর দুই নির্বাচনে ভিপি-জিএস নির্বাচিত হন যথাক্রমে মাহমুদুর রহমান মান্না ও আখতারুজ্জামান। আগের দুইবারের জিএস আখতারুজ্জামান ১৯৮২ তে নির্বাচিত হন ডাকসুর ভিপি, আর জিএস হন জিয়াউদ্দিন বাবলু। এরপর আবারও ডাকসুতে স্থবিরতা। ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষের নির্বাচনে নেতৃত্বে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ও মুশতাক হোসেন। পরের বছর নির্বাচিত হন আমানউল্লাহ আমান-খায়রুল কবির খোকন জুটি।

ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ছাত্র সমাজের কণ্ঠস্বর, মুক্তিযুদ্ধ আর গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠায় দ্বিতীয় সংসদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ডাকসুকে।

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ পতনের পর দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরলেও অনাস্থার চোরাবালিতে ডুবে যায় ডাকসু। নানা বাধা পেরিয়ে প্রায় তিন দশক পর ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় সবশেষ ডাকসু নির্বাচন। সেবার ছাত্রলীগ একচ্ছত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ পেলেও, সবাইকে চমকে দিয়ে ভিপি নির্বাচিত হন কোটা আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর।

৬ বছর পর এবারের নির্বাচনে অন্যান্য প্রায় সব সংগঠনের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলেও ভোটের লড়াইয়ে নেই সরকার পতনের পর নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগ।

আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ডাকসু এবং হল সংসদে শিক্ষার্থীদের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ ভোটের বিপরীতে ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন। ডাকসুতে ২৮টি পদের জন্য মোট ৪৭১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে ১৮টি হলে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি। এসব পদে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন ১ হাজার ৩৫ জন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে এবার ভোটারদের ৪১টি ভোট দিতে হচ্ছে।

এবারের ডাকসু ভোটে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে অন্তত ১০টি প্যানেল অংশ নিয়েছে। এর বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন প্রার্থীদের আরেকটি অংশ।