ময়মনসিংহ , রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি, দাবি স্টেট ডিফেন্সের সরানো হলো মোখলেসকে নতুন জনপ্রশাসন সচিব হতে পারেন রহুল আমিন যুক্ত হচ্ছে ১০ ট্রেন মেট্রোরেলে, চলবে রাত ১০টার পরও পিআর নাকি বিদ্যমান পদ্ধতিতে ভোট, সিদ্ধান্ত নেবে দলগুলোই বললেন প্রেস সচিব শেরপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অটোরিকশার বেপরোয়া চলাচল জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হলো সাতক্ষীরা উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার , ঢাকায় নাগরিক সমাবেশ দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নামবে বুধবার বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাজধানীতে ইলেকট্রনিক বাস চালুর বিষয়ে নভেম্বরে বৈঠক-রিজওয়ানা আবার ভূমিকম্প ৭ দিনের মাথায়, দেশের ভেতরেই উৎপত্তিস্থল
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

যুক্ত হচ্ছে ১০ ট্রেন মেট্রোরেলে, চলবে রাত ১০টার পরও

সকাল থেকে রাত নাগাদ রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে শহরের কেন্দ্রস্থল পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেল। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। শুধু সকাল-সন্ধ্যা অফিস টাইমে নয়, সারা দিনই নানা কাজে যাতায়াতের জন্য মেট্রোরেলকে বেছে নিচ্ছেন ঢাকাবাসী। এমনকি বিশেষ দিনে সংখ্যাটি সাড়ে চার লাখ ছাড়িয়ে যায়। 

এই বাড়তি চাপ সামলাতে শিগগিরই এমআরটি লাইন-৬-এ আরও ১০ ট্রিপ ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, রাত ১০টার পরও চলবে ট্রেন।

কথা থাকলেও মেট্রো ট্রেনে লাগানো যাচ্ছে না ২ কোচ

দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, মেট্রোরেলের স্টেশনে আরও দুটি কোচ দাঁড়ানোর মতো জায়গা আছে। তবে সেখানে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর (পিএসডি) লাগানো হয়নি। এটি হচ্ছে প্রথম কারণ। দ্বিতীয়ত, এ সব কিছুর জন্য আরও অনেক টাকা লাগে, যা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। আর তৃতীয়ত, অতিরিক্ত দুটি কোচ লাগালে আরও বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। যা বিদ্যমান ওভারহেড ক্যাটেনারি লোড নিতে পারবে কিনা, সেটি নিয়ে সংশয় আছে। ফলে আপাতত সেই পথে হাঁটছে না ডিএমটিসিএল।

নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন যে সময়ে চলতে পারে

দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য বর্তমানে আরও ১০ ট্রিপ ট্রেন চালানো যায় কিনা, সেটি নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ডিএমটিসিএলে চাপ দেওয়া হয়েছে। এতে আরও ট্রেন চালাতে ডিএমটিসিএল চেষ্টা করছে। বর্তমানে লোকবল যথেষ্ট না থাকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সবকিছু ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই এমআরটি লাইন-৬ এ নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন যুক্ত হবে।

দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, যে ১০টি সময়ে ট্রেন চালানো হবে, তার একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় যাত্রীরা সকাল ৬টার পর থেকেই ট্রেনে যাতায়াত শুরু করতে পারবেন। আর সর্বশেষ ট্রেনেও যাতায়াত যাবে রাত ১০টার পরে।

প্রতিদিন লাইনের নিরাপত্তা পরীক্ষা করতে সকাল ৬টা ও সাড়ে ৬টায় দুটি ‘সুইপিং ট্রেন’ চালানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দ্বিতীয় সুইপিং ট্রেনেই (সকাল সাড়ে ৬টা) প্রথম ট্রিপ শুরু হবে। এতে শুধুমাত্র এমআরটি পাস ও র‌্যাপিড পাসধারী যাত্রীরা উঠতে পারবেন। তবে ট্রেনটি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার গতিতে চলবে। এরপর উত্তরা থেকে সকাল ৭টায় দ্বিতীয় ট্রিপ ছাড়বে। মতিঝিল থেকে ছাড়তে পারে যথাক্রমে সকাল ৭টা ১০ ও ৭টা ২০ মিনিটে। বর্তমানে উত্তরা থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে এবং মতিঝিল থেকে সকাল সাড়ে ৭টায়।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাতে আরও ৬টি ট্রেন চলবে। এখন শেষ ট্রেন ছাড়ে উত্তরা থেকে রাত ৯টায় এবং মতিঝিল থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। তবে নতুন সূচিতে উত্তরা থেকে রাত ৯টা ১০, ৯টা ২০ ও ৯টা ৩০ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে। মতিঝিল থেকে ছাড়তে পারে রাত ৯টা ৫০, ১০টা ও ১০টা ১০ মিনিটে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল বলেন, ‘এটি এখন স্টাডি করছি, স্টাডি চলছে। স্টাডি শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে। আমরা চেষ্টা করছি।’

ট্রিপ নয়, কোচ বাড়ানো জরুরি : যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ

মেট্রো ট্রেনের কোচ না বাড়িয়ে ট্রিপ বাড়ানোর বিষয়ে জানতে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বলেন, মেট্রোর পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হলেও যাত্রীচাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত সরবরাহ দেওয়া যাচ্ছে না। এখন কোচ বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা টেকনিক্যাল কারণ বা অজুহাত সামনে আনা দুঃখজনক। কারণ, মেট্রো যখন পরিকল্পনা ও যাচাই করা হয়েছিল, তখন থেকেই ৮টি কোচের হিসাব ধরে প্রকল্পটি করা হয়। এমনকি প্ল্যাটফর্মগুলোও সে অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে। আর প্ল্যাটফর্ম নির্মাণে সরকারের ব্যয়ও হয়েছে। তাই বর্তমান যে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো আগেই সমাধান করা উচিত ছিল। যাচাই-বাছাইয়ের মূল উদ্দেশ্যই থাকে প্রকল্পটি যেন ভবিষ্যতে কার্যকর থাকে এবং কোনো বড় ধরনের অসুবিধা তৈরি না হয়।

তিনি আরও বলেন, মেট্রোর ক্ষেত্রে বেশি ট্রিপ চালানোর চেয়ে কোচ সংখ্যা বাড়ানো জরুরি। কারণ, যখনই তিন–চারটি অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হবে, তখনই বিদ্যুৎ বিল বেড়ে যাবে। মেট্রো আসলে একটি অত্যন্ত এনার্জি-হাঙরি পরিবহন ব্যবস্থা। হেডওয়ে এক মিনিট কমিয়ে দিলেই বিদ্যুৎ খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। তাই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি, দাবি স্টেট ডিফেন্সের

যুক্ত হচ্ছে ১০ ট্রেন মেট্রোরেলে, চলবে রাত ১০টার পরও

আপডেট সময় ০২:৫৯:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সকাল থেকে রাত নাগাদ রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে শহরের কেন্দ্রস্থল পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেল। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। শুধু সকাল-সন্ধ্যা অফিস টাইমে নয়, সারা দিনই নানা কাজে যাতায়াতের জন্য মেট্রোরেলকে বেছে নিচ্ছেন ঢাকাবাসী। এমনকি বিশেষ দিনে সংখ্যাটি সাড়ে চার লাখ ছাড়িয়ে যায়। 

এই বাড়তি চাপ সামলাতে শিগগিরই এমআরটি লাইন-৬-এ আরও ১০ ট্রিপ ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, রাত ১০টার পরও চলবে ট্রেন।

কথা থাকলেও মেট্রো ট্রেনে লাগানো যাচ্ছে না ২ কোচ

দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, মেট্রোরেলের স্টেশনে আরও দুটি কোচ দাঁড়ানোর মতো জায়গা আছে। তবে সেখানে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর (পিএসডি) লাগানো হয়নি। এটি হচ্ছে প্রথম কারণ। দ্বিতীয়ত, এ সব কিছুর জন্য আরও অনেক টাকা লাগে, যা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। আর তৃতীয়ত, অতিরিক্ত দুটি কোচ লাগালে আরও বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। যা বিদ্যমান ওভারহেড ক্যাটেনারি লোড নিতে পারবে কিনা, সেটি নিয়ে সংশয় আছে। ফলে আপাতত সেই পথে হাঁটছে না ডিএমটিসিএল।

নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন যে সময়ে চলতে পারে

দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য বর্তমানে আরও ১০ ট্রিপ ট্রেন চালানো যায় কিনা, সেটি নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ডিএমটিসিএলে চাপ দেওয়া হয়েছে। এতে আরও ট্রেন চালাতে ডিএমটিসিএল চেষ্টা করছে। বর্তমানে লোকবল যথেষ্ট না থাকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সবকিছু ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই এমআরটি লাইন-৬ এ নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন যুক্ত হবে।

দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, যে ১০টি সময়ে ট্রেন চালানো হবে, তার একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় যাত্রীরা সকাল ৬টার পর থেকেই ট্রেনে যাতায়াত শুরু করতে পারবেন। আর সর্বশেষ ট্রেনেও যাতায়াত যাবে রাত ১০টার পরে।

প্রতিদিন লাইনের নিরাপত্তা পরীক্ষা করতে সকাল ৬টা ও সাড়ে ৬টায় দুটি ‘সুইপিং ট্রেন’ চালানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দ্বিতীয় সুইপিং ট্রেনেই (সকাল সাড়ে ৬টা) প্রথম ট্রিপ শুরু হবে। এতে শুধুমাত্র এমআরটি পাস ও র‌্যাপিড পাসধারী যাত্রীরা উঠতে পারবেন। তবে ট্রেনটি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার গতিতে চলবে। এরপর উত্তরা থেকে সকাল ৭টায় দ্বিতীয় ট্রিপ ছাড়বে। মতিঝিল থেকে ছাড়তে পারে যথাক্রমে সকাল ৭টা ১০ ও ৭টা ২০ মিনিটে। বর্তমানে উত্তরা থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে এবং মতিঝিল থেকে সকাল সাড়ে ৭টায়।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাতে আরও ৬টি ট্রেন চলবে। এখন শেষ ট্রেন ছাড়ে উত্তরা থেকে রাত ৯টায় এবং মতিঝিল থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। তবে নতুন সূচিতে উত্তরা থেকে রাত ৯টা ১০, ৯টা ২০ ও ৯টা ৩০ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে। মতিঝিল থেকে ছাড়তে পারে রাত ৯টা ৫০, ১০টা ও ১০টা ১০ মিনিটে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল বলেন, ‘এটি এখন স্টাডি করছি, স্টাডি চলছে। স্টাডি শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে। আমরা চেষ্টা করছি।’

ট্রিপ নয়, কোচ বাড়ানো জরুরি : যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ

মেট্রো ট্রেনের কোচ না বাড়িয়ে ট্রিপ বাড়ানোর বিষয়ে জানতে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বলেন, মেট্রোর পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হলেও যাত্রীচাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত সরবরাহ দেওয়া যাচ্ছে না। এখন কোচ বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা টেকনিক্যাল কারণ বা অজুহাত সামনে আনা দুঃখজনক। কারণ, মেট্রো যখন পরিকল্পনা ও যাচাই করা হয়েছিল, তখন থেকেই ৮টি কোচের হিসাব ধরে প্রকল্পটি করা হয়। এমনকি প্ল্যাটফর্মগুলোও সে অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে। আর প্ল্যাটফর্ম নির্মাণে সরকারের ব্যয়ও হয়েছে। তাই বর্তমান যে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো আগেই সমাধান করা উচিত ছিল। যাচাই-বাছাইয়ের মূল উদ্দেশ্যই থাকে প্রকল্পটি যেন ভবিষ্যতে কার্যকর থাকে এবং কোনো বড় ধরনের অসুবিধা তৈরি না হয়।

তিনি আরও বলেন, মেট্রোর ক্ষেত্রে বেশি ট্রিপ চালানোর চেয়ে কোচ সংখ্যা বাড়ানো জরুরি। কারণ, যখনই তিন–চারটি অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হবে, তখনই বিদ্যুৎ বিল বেড়ে যাবে। মেট্রো আসলে একটি অত্যন্ত এনার্জি-হাঙরি পরিবহন ব্যবস্থা। হেডওয়ে এক মিনিট কমিয়ে দিলেই বিদ্যুৎ খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। তাই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।