ময়মনসিংহ , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

আগরতলায় আওয়ামী লীগ কি সত্যিই প্রবাসী সরকার গঠন করছে?

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় ১১:০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভারতের আগরতলায় সমাবেশ করে প্রবাসী সরকার গঠনের চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সমন্বয়কদের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে গুঞ্জন চলছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ও ভারত সরকারের কর্মকর্তারা এটিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জনে শোনা যায়, কুমিল্লার বিবিরবাজার সীমান্তবর্তী এলাকায় কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ফেনীর আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাকর্মীরা শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ৩টার দিকে একটি বৈঠক করেন। পরের দিন রোববার (২০ অক্টোবর) ত্রিপুরায় আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নিয়ে একাত্তরের মুজিবনগর সরকারের আদলে একটি অস্থায়ী সরকারেরও ঘোষণা দিতে পারেন গুঞ্জন ছড়ায়। কিন্তু পরে আর ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

রোববার ওই সমাবেশ না করতে পারলেও আওয়ামী লীগ ফের ওই সমাবেশ করবে কি না, এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। দলটি যদি সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়ও, ভারত সরকার কি ওই ধরনের দলীয় কর্মসূচি করার অনুমতি দেবে?

কী বলছে আওয়ামী লীগ?

আওয়ামী লীগ ভারতের মাটিতে সমাবেশ ও প্রবাসী সরকার ঘোষণা করতে যাচ্ছে বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা যে দাবি করেছেন, তার কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, এগুলো সব ভিত্তিহীন, অসত্য এবং প্রোপাগান্ডা।

ক্ষমতা গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকার এখন দেশ চালাতে পারছে না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

তিনি বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই তারা এখন এসব প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। কিন্তু এসব করে পার পাওয়া যাবে না। ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই অন্তর্বর্তীকালীন অবৈধ সরকারকে নিতে হবে।

তবে, নেতাকর্মীদের অনেকে যে ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন এবং এখনও ছাড়ার চেষ্টা করছেন, সেটি অবশ্য স্বীকার করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের উপর যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন-মামলা-হামলা চালানো হচ্ছে, তাতে করে জীবন বাঁচাতে কেউ যদি দেশের বাইরে আশ্রয় নেয়, সেটা কি সে পারে না?

ভারত কী বলছে?

ভারত সরকারের কর্মকর্তারাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবিকে সম্পূর্ণ ‘গাঁজাখুরি ও ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ভারত অবশ্য বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ভারত সরকারের একটি সূত্র বলছে, কারা বলছেন এসব কথা? তারা কি কোনও দায়িত্বপূর্ণ পদে আছেন? পাশের দেশে যে কেউ একটা আজগুবি কথা বললেই আমরা কেন জবাব দিতে যাবো?

এ ধরনের দাবির যে কোনও ভিত্তি নেই, সেটা অবশ্য ত্রিপুরা এবং দিল্লিতে নানা মহলে খোঁজখবর নিয়েও নিশ্চিত হওয়া গেছে।কারণ, প্রথমত, আওয়ামী লীগের পালিয়ে আসা নেতা-কর্মীরা যদি ত্রিপুরার মাটিতে বড় মাপের কোনও সমাবেশ করতে চান, সেটা একেবারে গোপনে বা স্থানীয়দের কাউকে টের পেতে না-দিয়ে করা সম্ভব নয়।

ত্রিপুরার সরকারি ও বেসরকারি একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রাজধানী আগরতলায় এ ধরনের কোনও তৎপরতা গত কয়েক সপ্তাহে তাদের আদৌ চোখে পড়েনি।

দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ যদি ভারতের মাটিতে কোনও প্রকাশ্য সভা করেও, সেখানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে ভাষণ দিতে দেওয়া হবে, সে সম্ভাবনা একেবারেই নেই।

গত আড়াই মাসে ভারত বারবার এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে, এক বিশেষ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে নিজের সুরক্ষার জন্য শেখ হাসিনাকে ভারতে চলে আসতে হয়েছে এবং তখন তাকে আতিথেয়তা দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তাকে প্রকাশ্য রাজনীতিতে অংশ নিতে দেওয়া হবে, ভারত এখনও এরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

আগরতলায় আওয়ামী লীগ কি সত্যিই প্রবাসী সরকার গঠন করছে?

আপডেট সময় ১১:০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভারতের আগরতলায় সমাবেশ করে প্রবাসী সরকার গঠনের চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সমন্বয়কদের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে গুঞ্জন চলছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ও ভারত সরকারের কর্মকর্তারা এটিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জনে শোনা যায়, কুমিল্লার বিবিরবাজার সীমান্তবর্তী এলাকায় কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ফেনীর আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাকর্মীরা শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ৩টার দিকে একটি বৈঠক করেন। পরের দিন রোববার (২০ অক্টোবর) ত্রিপুরায় আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নিয়ে একাত্তরের মুজিবনগর সরকারের আদলে একটি অস্থায়ী সরকারেরও ঘোষণা দিতে পারেন গুঞ্জন ছড়ায়। কিন্তু পরে আর ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

রোববার ওই সমাবেশ না করতে পারলেও আওয়ামী লীগ ফের ওই সমাবেশ করবে কি না, এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। দলটি যদি সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়ও, ভারত সরকার কি ওই ধরনের দলীয় কর্মসূচি করার অনুমতি দেবে?

কী বলছে আওয়ামী লীগ?

আওয়ামী লীগ ভারতের মাটিতে সমাবেশ ও প্রবাসী সরকার ঘোষণা করতে যাচ্ছে বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা যে দাবি করেছেন, তার কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, এগুলো সব ভিত্তিহীন, অসত্য এবং প্রোপাগান্ডা।

ক্ষমতা গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকার এখন দেশ চালাতে পারছে না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

তিনি বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই তারা এখন এসব প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। কিন্তু এসব করে পার পাওয়া যাবে না। ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই অন্তর্বর্তীকালীন অবৈধ সরকারকে নিতে হবে।

তবে, নেতাকর্মীদের অনেকে যে ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন এবং এখনও ছাড়ার চেষ্টা করছেন, সেটি অবশ্য স্বীকার করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের উপর যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন-মামলা-হামলা চালানো হচ্ছে, তাতে করে জীবন বাঁচাতে কেউ যদি দেশের বাইরে আশ্রয় নেয়, সেটা কি সে পারে না?

ভারত কী বলছে?

ভারত সরকারের কর্মকর্তারাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবিকে সম্পূর্ণ ‘গাঁজাখুরি ও ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ভারত অবশ্য বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ভারত সরকারের একটি সূত্র বলছে, কারা বলছেন এসব কথা? তারা কি কোনও দায়িত্বপূর্ণ পদে আছেন? পাশের দেশে যে কেউ একটা আজগুবি কথা বললেই আমরা কেন জবাব দিতে যাবো?

এ ধরনের দাবির যে কোনও ভিত্তি নেই, সেটা অবশ্য ত্রিপুরা এবং দিল্লিতে নানা মহলে খোঁজখবর নিয়েও নিশ্চিত হওয়া গেছে।কারণ, প্রথমত, আওয়ামী লীগের পালিয়ে আসা নেতা-কর্মীরা যদি ত্রিপুরার মাটিতে বড় মাপের কোনও সমাবেশ করতে চান, সেটা একেবারে গোপনে বা স্থানীয়দের কাউকে টের পেতে না-দিয়ে করা সম্ভব নয়।

ত্রিপুরার সরকারি ও বেসরকারি একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রাজধানী আগরতলায় এ ধরনের কোনও তৎপরতা গত কয়েক সপ্তাহে তাদের আদৌ চোখে পড়েনি।

দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ যদি ভারতের মাটিতে কোনও প্রকাশ্য সভা করেও, সেখানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে ভাষণ দিতে দেওয়া হবে, সে সম্ভাবনা একেবারেই নেই।

গত আড়াই মাসে ভারত বারবার এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে, এক বিশেষ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে নিজের সুরক্ষার জন্য শেখ হাসিনাকে ভারতে চলে আসতে হয়েছে এবং তখন তাকে আতিথেয়তা দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তাকে প্রকাশ্য রাজনীতিতে অংশ নিতে দেওয়া হবে, ভারত এখনও এরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।