কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা দল আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং অনলাইন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন বলে সরকারি বৈঠকে জানানো হয়েছে। রাজধানীতে গত বুধবার আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৪৪ জনের মধ্যে দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে টেলিগ্রাম ও বোটিম অ্যাপ ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
গত রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকে আলোচনা হয়, আপাতত রাতে দুটি অ্যাপের ব্যবহার সীমিত করা যায় কি না এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর টেলিগ্রাম ও বোটিম বাংলাদেশে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
টেলিগ্রাম একটি জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ, যার প্রতিষ্ঠাতা রুশ বংশোদ্ভূত পাভেল দুরভ। অন্যদিকে বোটিম ব্যবহার করা হয় কথা বলা, ভিডিও কল এবং অর্থ লেনদেনের জন্য। এর প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রে।
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত ১৩ মাসে ‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত’ অভিযোগে ৪৪ হাজার ৪৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশ—অর্থাৎ ৩২ হাজার ৩৭১ জন জামিন পেয়েছেন। বৈঠকে বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ে অনেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), আইনজীবী সমিতি ও রাজনৈতিক নেতারা জামিন প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখছেন। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জামিনের বিষয়টি আরও কঠোরভাবে দেখা হবে এবং জেলা প্রশাসকদের সতর্ক করা হবে।
তবে মানবাধিকারকর্মীরা এ বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, জামিন পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। তবে প্রকৃত অপরাধে জড়িতদের ক্ষেত্রে যথাযথ তদন্ত ও প্রমাণ আদালতের সামনে উপস্থাপন করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মানবাধিকারকর্মী নূর খান বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে অনেক সাধারণ মানুষকে হয়রানিমূলকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফলে তাদের জামিন পাওয়া স্বাভাবিক। মূলত সঠিকভাবে মামলা দায়ের ও তদন্ত করাটাই জরুরি।’