ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে অন্যরা সাড়া দিলে আমরাও আলোচনায় বসতে রাজি বললেন তাহের মামুনের মাথায় ফ্রিজে রাখা খুলি দুই মাস পর লাগানো হলো সিদ্ধান্ত দেবে সরকার গণভোট নিয়ে দলগুলো ‘ঐকমত্যে’ পৌঁছাতে না পারলে কুশপুত্তলিকা দাহ এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর তারেক রহমান দলীয় এমপি-প্রার্থী তালিকা চূড়ান্তে বৈঠক ডেকেছেন নির্বাচনে জোরালো ভূমিকা পালন করবে আনসার জানিয়েছেন মহাপরিচালক আজ তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য ডিএমপির সাবেক কমিশনারসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে সংকটময় মুহূর্তে দেশ, কোনদিকে যাবে তা নির্ভর করছে নির্বাচনের ওপর বললেন সিইসি সংবাদ সম্মেলন শুরু প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বাস- ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১৯ তেলেঙ্গানায়
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির মধ্যে ১৯৪ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে

  • ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৯:১৫:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিনের সরকারি মিডিয়া অফিস রোববার (২ নভেম্বর) অভিযোগ করেছে, গাজায় গত ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অন্তত ১৯৪ বার চুক্তি ভঙ্গ করেছে। 

সংস্থাটির পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতেহ আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, এসব লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করে সামরিক অনুপ্রবেশ, গুলি ও গোলাবর্ষণ, বিমান হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ এবং চিকিৎসা সামগ্রী, ওষুধ, তাঁবু ও মোবাইল হোম গাজায় প্রবেশে বাধা দেওয়া।

ইসরায়েলি বাহিনী বারবার ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করে আবাসিক এলাকায় যানবাহন পাঠাচ্ছে, বেসামরিক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে এবং এসব হামলায় বহু মানুষ হতাহত হচ্ছে বলেও থাওয়াবতেহ জানান। ‘হলুদ রেখা’ বলতে বোঝানো হয়েছে সেই অঞ্চলকে, যেখান থেকে ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে ১০ অক্টোবর হামলা প্রত্যাহার করেছে। এটি একটি অদৃশ্য বিভাজন রেখা, যা গাজা শহরের দক্ষিণ ও খান ইউনিসের উত্তরের মধ্য দিয়ে গাজা উপত্যকাকে দুটি অংশে ভাগ করেছে। থাওয়াবতেহ ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ‘হলুদ রেখার’ কাছাকাছি যাওয়া বিপজ্জনক, কারণ ইসরায়েল আগেও কোনো সতর্কতা ছাড়াই সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল এখনো ত্রাণ কনভয়গুলোর পূর্ণ প্রবেশের অনুমতি দেয়নি এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য রোগীদের সরিয়ে নিতে মিশরের সঙ্গে রাফাহ ক্রসিং পুনরায় চালু করেনি।

মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চুক্তির আওতায় অনুমোদিত ১৩,২০০ ট্রাকের মধ্যে মাত্র ৩,২০৩টি গাজায় প্রবেশ করতে পেরেছে—যা মাত্র ২৪ শতাংশ। ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক সংকট আরও তীব্র করছে এবং রাফাহ সীমান্তে মিশরের দিকে ছয় হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে রেখেছে বলেও থাওয়াবতেহ অভিযোগ করেন।

মিডিয়া অফিস জানায়, যুদ্ধবিরতি প্রোটোকলে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য শত শত ভারী যন্ত্রপাতি প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি; কেবল ইসরায়েলি বন্দীদের মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য সীমিত কিছু যন্ত্রপাতি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে অফিস জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো প্রায় ৯,৫০০ ফিলিস্তিনি নিখোঁজ বা নিহত অবস্থায় পড়ে আছেন। এছাড়া প্রোটোকলে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য ৩ লাখের বেশি তাঁবু ও মোবাইল হোম প্রবেশের কথাও বলা হয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েল তা কার্যকর না করায় প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার ফিলিস্তিনি পরিবার এখন রাস্তায় বা উন্মুক্ত স্থানে বসবাস করছে।

গাজা সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ভূখণ্ডের প্রায় ৯০ শতাংশ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করেছে দখলদার বাহিনী, যার ফলে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। থাওয়াবতেহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তাঁরা অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে ইসরায়েলকে চুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন এবং লঙ্ঘন বন্ধে বাধ্য করেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে অন্যরা সাড়া দিলে আমরাও আলোচনায় বসতে রাজি বললেন তাহের

ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির মধ্যে ১৯৪ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে

আপডেট সময় ০৯:১৫:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

ফিলিস্তিনের সরকারি মিডিয়া অফিস রোববার (২ নভেম্বর) অভিযোগ করেছে, গাজায় গত ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অন্তত ১৯৪ বার চুক্তি ভঙ্গ করেছে। 

সংস্থাটির পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতেহ আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, এসব লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করে সামরিক অনুপ্রবেশ, গুলি ও গোলাবর্ষণ, বিমান হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ এবং চিকিৎসা সামগ্রী, ওষুধ, তাঁবু ও মোবাইল হোম গাজায় প্রবেশে বাধা দেওয়া।

ইসরায়েলি বাহিনী বারবার ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করে আবাসিক এলাকায় যানবাহন পাঠাচ্ছে, বেসামরিক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে এবং এসব হামলায় বহু মানুষ হতাহত হচ্ছে বলেও থাওয়াবতেহ জানান। ‘হলুদ রেখা’ বলতে বোঝানো হয়েছে সেই অঞ্চলকে, যেখান থেকে ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে ১০ অক্টোবর হামলা প্রত্যাহার করেছে। এটি একটি অদৃশ্য বিভাজন রেখা, যা গাজা শহরের দক্ষিণ ও খান ইউনিসের উত্তরের মধ্য দিয়ে গাজা উপত্যকাকে দুটি অংশে ভাগ করেছে। থাওয়াবতেহ ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ‘হলুদ রেখার’ কাছাকাছি যাওয়া বিপজ্জনক, কারণ ইসরায়েল আগেও কোনো সতর্কতা ছাড়াই সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল এখনো ত্রাণ কনভয়গুলোর পূর্ণ প্রবেশের অনুমতি দেয়নি এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য রোগীদের সরিয়ে নিতে মিশরের সঙ্গে রাফাহ ক্রসিং পুনরায় চালু করেনি।

মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চুক্তির আওতায় অনুমোদিত ১৩,২০০ ট্রাকের মধ্যে মাত্র ৩,২০৩টি গাজায় প্রবেশ করতে পেরেছে—যা মাত্র ২৪ শতাংশ। ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক সংকট আরও তীব্র করছে এবং রাফাহ সীমান্তে মিশরের দিকে ছয় হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে রেখেছে বলেও থাওয়াবতেহ অভিযোগ করেন।

মিডিয়া অফিস জানায়, যুদ্ধবিরতি প্রোটোকলে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য শত শত ভারী যন্ত্রপাতি প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি; কেবল ইসরায়েলি বন্দীদের মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য সীমিত কিছু যন্ত্রপাতি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে অফিস জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো প্রায় ৯,৫০০ ফিলিস্তিনি নিখোঁজ বা নিহত অবস্থায় পড়ে আছেন। এছাড়া প্রোটোকলে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য ৩ লাখের বেশি তাঁবু ও মোবাইল হোম প্রবেশের কথাও বলা হয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েল তা কার্যকর না করায় প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার ফিলিস্তিনি পরিবার এখন রাস্তায় বা উন্মুক্ত স্থানে বসবাস করছে।

গাজা সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ভূখণ্ডের প্রায় ৯০ শতাংশ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করেছে দখলদার বাহিনী, যার ফলে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। থাওয়াবতেহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তাঁরা অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে ইসরায়েলকে চুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন এবং লঙ্ঘন বন্ধে বাধ্য করেন।