যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম ভোটাররা এবারের ৪ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের বিপুলভাবে সমর্থন করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির প্রতি ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের প্রেক্ষাপটে এই প্রবণতা স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির মুসলিম অধিকার সংস্থা ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস’ (সিএআইআর)। সোমবার (১০ নভেম্বর) প্রকাশিত সংস্থার বুথফেরত জরিপে এই তথ্য উঠে আসে।
জরিপে দেখা গেছে, নিউইয়র্কে নবনির্বাচিত মেয়র ও ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান মামদানিকে মুসলিম ভোটারদের ৯৭ শতাংশ সমর্থন দিয়েছেন। ভার্জিনিয়ার মুসলিম সিনেটর গাজালা হাশমিও লেফটেন্যান্ট গভর্নর পদে ৯৫ শতাংশ মুসলিম ভোট পেয়েছেন।
এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে অনুকূল নতুন কংগ্রেশনাল মানচিত্র অনুমোদনের প্রস্তাব ‘প্রস্তাব ৫০’-এর পক্ষে মুসলিম ভোটারদের ৯০ শতাংশ ভোট পড়ে।
সংস্থাটি আরও জানায়, চারটি অঙ্গরাজ্যে মুসলিম ভোটাররা ভোটের প্রক্রিয়ায় অসাধারণ আগ্রহ ও অঙ্গীকারের পরিচয় দিয়েছেন, যা মার্কিন সমাজে তাদের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা ও সক্রিয় নাগরিকত্বের প্রতিফলন।
আগামী ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নির্ধারিত হবে। তার এক বছর আগে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে ডেমোক্র্যাটদের জন্য প্রাথমিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে নির্বাচনের সময় বিশেষ করে নিউইয়র্কে ইসলামবিরোধী বক্তব্য বেড়ে যায়। রিপাবলিকান রাজনীতিক ও বিশ্লেষকদের অনেকে মুসলিম প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ট্রাম্পও এই নির্বাচনে সাবেক ডেমোক্র্যাট গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
সিএআইআর বলেছে, মুসলিম ভোটাররা ‘ইসলামবিদ্বেষের মুখেও নিজেদের ও প্রতিবেশীদের ভবিষ্যৎ গড়তে’ ভোট দিচ্ছেন, যা প্রমাণ করে—‘দেশের শক্তি নির্ধারণে পক্ষপাত নয়, অংশগ্রহণই মুখ্য বিষয়।’
জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন দেওয়ায় পূর্বে যারা ডেমোক্র্যাটদের থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই আবার দলে ফিরেছেন।
সিএআইআরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ৭৬ জন মুসলিম প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাদের মধ্যে ৩৮ জন বিজয়ী হয়েছেন। মিশিগানের ডেট্রয়েট, হ্যামট্রামিক, ডিয়ারবর্ন ও ডিয়ারবর্ন হাইটসে মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
আগামী বছরের কংগ্রেস নির্বাচনে আরও কয়েকজন মুসলিম প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন আবদুল এল–সায়েদ, যিনি মিশিগান থেকে মার্কিন সিনেটের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

ডিজিটাল ডেস্ক 























