ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

কাজী ও বরকে আদালতে সোপর্দ।

গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) আতাহার শাকিলের ভ্রাম্যমান আদালত এ সাজার আদেশ দেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন কাজী উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের আইজুদ্দিনের ছেলে আবু কালাম (৪০)। বর সোনামগঞ্জ জেলার জগনাথপুর থানা এলাকার ফারুক মিয়ার ছেলে কাহারুম (২৩)। কনের মামোছা. ফিরোজা বেগম (৪০)। তিনি রাজশাহী জেলার পুটিয়া থানা সদরের আ. কুদ্দছের স্ত্রী। তিনি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।

কিশোরীর বড় ভাই ফিরোজ মিয়া জানান, আমরা স্ব-পরিবারে উপজেলার বেড়াইদের চালা গ্রামের লাভলী আক্তারের বাড়িতে ভাড়া থাকি। একই বাড়িতে ভাড়া থাকেন কাহারুম। এক বছর ধরে গোপনে কাহারুম ১৩ বছর বয়েসী আমার ছোট বোন কারিমা আক্তারের সঙ্গে প্রেম করে আসছেন। আমার মা জাল জন্মনিবন্দ বানিয়ে তাতে আমার বোনের বয়স দেখায় ১৯ বছর। ওই ভুয়া জন্মসনদ দিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে গোপনে মা কাহারুমের সঙ্গে আমার ছোট বোনের বিয়ে দেন। পরে ওই কাজীর সহায়তায় গতকাল বুধবার দেড় লাখ টাকা দেনমোহর দেখিয়ে বিয়ের নোটারী পাবলিকের এ্যাফিডিবিট তৈরি করে। রাতে ওই কাজী আমার বোনের কাবিন রেজিট্রি করতে যান। খবর পেয়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা বাড়িতে হাজির হন। কাবিন রেজিট্রি করার সময় বালাম বইসহ কাজী, আমার মা, বোন ও বরকে আটক করা হয়।

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সদস্য মেহেদি হাসান আশিক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পাই বেড়াইদের চালা গ্রামের ওই বাড়িতে বাল্যবিয়ে পড়ানো হচ্ছে। এমন সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক আনসার সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালাই। কাজী আবু কালাম,বর কাহারুম ও কনের মা ফিরোজা বেগম ও কনে কারিমা আক্তারকে (১৩) আটক করি। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় বালাম বই, জাল জন্মনিবন্ধন ও নোটারী পাবলিকের হলফনামা। পরে তাদের ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করা হয়।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল জানান, ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযুক্তরা তাদের অপরাধ শিকার করেন। বাল্যবিয়ে পড়ানোর অপরাধে কাজীকে ছয় মাসের এবং বাল্যবিয়ে করার অপরাধে বরকে একুশ দিন সাজা প্রদান করা হয়। বাল্যবিয়েতে সহায়তার জন্য কনের মাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কাজী ও বরকে আদালতে সোপর্দ।

আপডেট সময় ১১:৩৮:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) আতাহার শাকিলের ভ্রাম্যমান আদালত এ সাজার আদেশ দেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন কাজী উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের আইজুদ্দিনের ছেলে আবু কালাম (৪০)। বর সোনামগঞ্জ জেলার জগনাথপুর থানা এলাকার ফারুক মিয়ার ছেলে কাহারুম (২৩)। কনের মামোছা. ফিরোজা বেগম (৪০)। তিনি রাজশাহী জেলার পুটিয়া থানা সদরের আ. কুদ্দছের স্ত্রী। তিনি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।

কিশোরীর বড় ভাই ফিরোজ মিয়া জানান, আমরা স্ব-পরিবারে উপজেলার বেড়াইদের চালা গ্রামের লাভলী আক্তারের বাড়িতে ভাড়া থাকি। একই বাড়িতে ভাড়া থাকেন কাহারুম। এক বছর ধরে গোপনে কাহারুম ১৩ বছর বয়েসী আমার ছোট বোন কারিমা আক্তারের সঙ্গে প্রেম করে আসছেন। আমার মা জাল জন্মনিবন্দ বানিয়ে তাতে আমার বোনের বয়স দেখায় ১৯ বছর। ওই ভুয়া জন্মসনদ দিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে গোপনে মা কাহারুমের সঙ্গে আমার ছোট বোনের বিয়ে দেন। পরে ওই কাজীর সহায়তায় গতকাল বুধবার দেড় লাখ টাকা দেনমোহর দেখিয়ে বিয়ের নোটারী পাবলিকের এ্যাফিডিবিট তৈরি করে। রাতে ওই কাজী আমার বোনের কাবিন রেজিট্রি করতে যান। খবর পেয়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা বাড়িতে হাজির হন। কাবিন রেজিট্রি করার সময় বালাম বইসহ কাজী, আমার মা, বোন ও বরকে আটক করা হয়।

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সদস্য মেহেদি হাসান আশিক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পাই বেড়াইদের চালা গ্রামের ওই বাড়িতে বাল্যবিয়ে পড়ানো হচ্ছে। এমন সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক আনসার সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালাই। কাজী আবু কালাম,বর কাহারুম ও কনের মা ফিরোজা বেগম ও কনে কারিমা আক্তারকে (১৩) আটক করি। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় বালাম বই, জাল জন্মনিবন্ধন ও নোটারী পাবলিকের হলফনামা। পরে তাদের ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করা হয়।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল জানান, ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযুক্তরা তাদের অপরাধ শিকার করেন। বাল্যবিয়ে পড়ানোর অপরাধে কাজীকে ছয় মাসের এবং বাল্যবিয়ে করার অপরাধে বরকে একুশ দিন সাজা প্রদান করা হয়। বাল্যবিয়েতে সহায়তার জন্য কনের মাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।