পহেলা বৈশাখ মানেই আবহমান গ্রাম বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্য। শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রাম গুলোতেও ঘটা করে পালিত হয় এই দিনটি। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বগুড়া নন্দীগ্রাম উপজেলার কয়েকটি গ্রামে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে উৎসব চলছে ঘরে ঘরে।
উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের পাঠান গ্রামে আনুমানিক ২শ বছর ধরে এ মেলা বসছে। প্রাচীন এ মেলায় লোকসমাগম বেড়ে যাওয়ায় পাশের গ্রাম নিমাইদীঘিতেও আরেকটি মেলা বসছে এক দশক ধরে। গ্রামীণ জনপদজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। নাইওর এসেছেন ৪০-৫০ গ্রামের নববধূ ও মেয়েরা। শ্বশুরবাড়িতে নিমন্ত্রণে এসেছেন জামাইয়েরা। উপলক্ষ দুই দিনের মেলা। মেলা উপলক্ষে শ্বশুরবাড়িতে জামাইদের নিমন্ত্রণের রেওয়াজ চালু আছে বলে স্থানীয়ভাবে এই দুটি মেলা ‘জামাই মেলা’ নামে পরিচিত। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ওই গ্রামের লোকজন আয়োজন করে ব্যতিক্রমধর্মী এই জামাই মেলা। হাজার হাজার দর্শনার্থী এই মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করে। মেলাটির নাম যেহেতু জামাই মেলা, সেহেতু এই মেলার মূল আকর্ষণ বাহারি রকমের মিষ্টির।
মেলায় ঘুরতে আসা আব্দুল হাকিম জানালেন, তার বাড়ি উপজেলার রনবাঘা গ্রামে। পহেলা বৈশাখ ও জামাই মেলা উপলক্ষে তিনি শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত খেতে এসেছেন। এবার দিয়ে পাঁচ বার তিনি এখানে এলেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন জামাই আদর করে, তারপরেও জামাই হিসেবে তিনি বিভিন্ন ধরনের ১০ কেজি মিষ্টি কিনেছেন। সাথী নামের আরেকজন জানান, পহেলা বৈশাখ এলে তার খুব ভালো লাগে। এইদিন মেলা হয় তাই ঈদের দিনের মতো বাবার বাড়িতে অনেকেই বেড়াতে আসে। ভাইবোন ও বান্ধবীদের সাথে দেখা হয়। খুব ভাল লাগে।
নিমাইদিঘী বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি কুদ্দুস হাসান জানান, মেয়ে জামাইদের সম্মান প্রদর্শন করতেই শত বছর ধরে মেলাটির আয়োজন করা হয়। পহেলা বৈশাখের আনন্দ অনেক বাড়িয়ে দেয় এই মেলাটি। এই মেলা দুদিনের জন্য হলেও এর আমেজ চলতে থাকে সপ্তাহব্যাপী। এই মেলার শেষের দিন উপস্থিত হয় শুধু নারীরা। মেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।