ময়মনসিংহ , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত শিশু আরাফাত মারা গেছে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিশন গঠন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঘন কুয়াশায় নাটোরে ৬ ট্রাকে সংঘর্ষ, নিহত ১ আহত ৭ ডলার বাজারে অস্থিরতা, লেনদেনের তথ্য চায় বাংলাদেশ ব্যাংক সাবেক এমপি পোটন রিমান্ডে যুবদল নেতা হত্যা মামলায় টিউলিপ সিদ্দিককে যুক্তরাজ্যে জিজ্ঞাসাবাদ,৪ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ চিরকুট লিখে বীর মুক্তিযোদ্ধা আত্মহত্যা করলেন দুদকের মামলা স্ত্রী-কন্যাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চলছিল অস্ত্র-মাদক কেনাবেচা
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

পাঁচ বছরে ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি টাকা -নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানিতে

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ১২:২৫:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪
  • ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

সংগৃহিত ছবি

অনলাইন নিউজ-

নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে সরকার। নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সীমান্ত না থাকায় দেশটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতীয় সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করতে হবে। ফলে নেপালের বিদ্যুৎ আমদানি করতে ভারতকে দিতে হবে ট্রেডিং মার্জিন ও সঞ্চালন চার্জ। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।

সব মিলিয়ে নেপালের জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসতে দাম পড়বে ইউনিটপ্রতি ৯ টাকা। নেপালের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানিতে পাঁচ বছরে ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে কয়লা ও জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় অনেকটাই সাশ্রয়ী দামে নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানি করা যাবে।

এর মধ্যে ত্রিদেশীয় বৈঠক শেষ হয়েছে। খুব শিগগির নেপালের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। পাঁচ বছরের জন্য নেপালের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চূড়ান্ত চুক্তি করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। যদিও ২৫ বছর নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা সরকারের।

এ ছাড়া নেপালে বাস্তবায়নাধীন ভারতের জিএমআর গ্রুপের জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আরো ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে শিগগিরই একটি চুক্তি সই হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও ভবিষ্যতে শীত মৌসুমে যখন দেশে চাহিদা কমে যায়, তখন উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ নেপালে রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অবস্থিত এইচভিডিসি সাবস্টেশনের অব্যবহৃত ক্যাপাসিটি ব্যবহার করে ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে আসবে নেপালের এই জলবিদ্যুৎ। নেপালের ন্যাশনাল ইলেকট্রিক অথরিটি এবং বিপিডিবির মধ্যে ট্যারিফ নির্ধারণ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের সঞ্চালন চার্জ ও ট্রেডিং মার্জিন চূড়ান্ত হয়েছে।বিপিডিবির তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ হচ্ছে ১৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ২২ টাকা ৩৮ পয়সা পর্যন্ত। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও ইউনিটপ্রতি উৎপাদন খরচ হচ্ছে ১০ টাকার বেশি। সে তুলনায় নেপালের জলবিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিগগিরই আমাদের জাতীয় গ্রিডে নেপালের ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ যুক্ত হবে। ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শুনতে কম মনে হলেও এর মাধ্যমে নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বার উন্মোচন হবে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে আমরা ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছি, প্রথমবারের মতো নেপাল থেকে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হবে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি উপমহাদেশের মধ্যে প্রথম।’মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘আমাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে গড়ে ইউনিটপ্রতি উৎপাদন খরচ পড়ছে ১০ থেকে ১২ টাকার মতো। সেই হিসাবে নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানি আমাদের জন্য অনেকটাই সাশ্রয়ী হবে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ও দর-কাষাকষি শেষে নেপাল থেকে ভারতের মুজাফফরপুর সাবস্টেশন পর্যন্ত প্রতি ইউনিট এনার্জি ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬.৪০ মার্কিন সেন্টস। প্রতি ডলারের দাম ১১৭ টাকা হিসাব করলে বাংলাদেশি সাড়ে সাত টাকা হয়। ভারতে ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কম্পানি এনপিটিপিসি, বিদ্যুৎ ভেপার নিগাম লিমিটেডের (এনভিভিএন) ট্রেডিং মার্জিন ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে ভারতীয় রুপিতে ০.০৫৯৫ রুপি। গত ২১ মার্চের হিসাবে প্রতি রুপি এক টাকা ৪১ পয়সা হিসাব করলে টাকায় দাঁড়ায় ৮৪ পয়সা। এ ছাড়া রয়েছে ভারতের সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশনের নির্ধারিত ট্রান্সমিশন চার্জ। সব কিছু নিয়ে নেপালের জলবিদ্যুৎ দেশে আনতে ইউনিটপ্রতি খরচ পড়বে ৯ টাকার মতো।

বিদ্যুৎ ক্রয়ের এ প্রস্তাবটি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘সব পক্ষের আলোচনা শেষে এখন নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই আমদানি শুরু হবে। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হলে ভারতের ওপর দিয়ে তাদের সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করতে হবে। ভারত এতে সম্মত রয়েছে।’

বিপিডিবি সূত্র জানায়, ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ফলে দুই দিক থেকেই লাভবান হবে বাংলাদেশ। যেমন শীতের যে সময়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়, তখন নেপালে থাকে শুষ্ক মৌসুম। দেশটির তখন বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা থাকে। ওই সময় নেপাল বরং বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারবে।এদিকে অনুষ্ঠিত ৩০তম অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটিতেও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিপিডিবি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ কিনবে।

নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে সরকার। নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সীমান্ত না থাকায় দেশটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতীয় সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করতে হবে। ফলে নেপালের বিদ্যুৎ আমদানি করতে ভারতকে দিতে হবে ট্রেডিং মার্জিন ও সঞ্চালন চার্জ। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।

পাঁচ বছরে ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি টাকা -নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানিতে

জানা গেছে, নেপাল ও বাংলাদেশ ২০১৮ সালে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। নেপাল ও ভারতে বিদ্যুৎ বিক্রির সুযোগ রেখে নেপালের সুঙ্কোশি-৩ প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশ।

ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে ২৬৫৬ মেগাওয়াট

২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রথম ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ। বর্তমানে ভারত থেকে দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে সরকার। ভারতের বহরমপুর থেকে ভেড়ামারা সাবস্টেশনের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট এবং কুমিল্লা দিয়ে ভারতের সূর্যনগর থেকে আরো ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানি গ্রুপ নির্মাণ করেছে এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্র। ভারতের বেসরকারি কম্পানির এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে সরকার।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে

পাঁচ বছরে ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি টাকা -নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানিতে

আপডেট সময় ১২:২৫:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

অনলাইন নিউজ-

নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে সরকার। নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সীমান্ত না থাকায় দেশটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতীয় সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করতে হবে। ফলে নেপালের বিদ্যুৎ আমদানি করতে ভারতকে দিতে হবে ট্রেডিং মার্জিন ও সঞ্চালন চার্জ। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।

সব মিলিয়ে নেপালের জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসতে দাম পড়বে ইউনিটপ্রতি ৯ টাকা। নেপালের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানিতে পাঁচ বছরে ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে কয়লা ও জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় অনেকটাই সাশ্রয়ী দামে নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানি করা যাবে।

এর মধ্যে ত্রিদেশীয় বৈঠক শেষ হয়েছে। খুব শিগগির নেপালের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। পাঁচ বছরের জন্য নেপালের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চূড়ান্ত চুক্তি করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। যদিও ২৫ বছর নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা সরকারের।

এ ছাড়া নেপালে বাস্তবায়নাধীন ভারতের জিএমআর গ্রুপের জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আরো ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে শিগগিরই একটি চুক্তি সই হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও ভবিষ্যতে শীত মৌসুমে যখন দেশে চাহিদা কমে যায়, তখন উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ নেপালে রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অবস্থিত এইচভিডিসি সাবস্টেশনের অব্যবহৃত ক্যাপাসিটি ব্যবহার করে ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে আসবে নেপালের এই জলবিদ্যুৎ। নেপালের ন্যাশনাল ইলেকট্রিক অথরিটি এবং বিপিডিবির মধ্যে ট্যারিফ নির্ধারণ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের সঞ্চালন চার্জ ও ট্রেডিং মার্জিন চূড়ান্ত হয়েছে।বিপিডিবির তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ হচ্ছে ১৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ২২ টাকা ৩৮ পয়সা পর্যন্ত। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও ইউনিটপ্রতি উৎপাদন খরচ হচ্ছে ১০ টাকার বেশি। সে তুলনায় নেপালের জলবিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিগগিরই আমাদের জাতীয় গ্রিডে নেপালের ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ যুক্ত হবে। ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শুনতে কম মনে হলেও এর মাধ্যমে নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বার উন্মোচন হবে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে আমরা ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছি, প্রথমবারের মতো নেপাল থেকে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হবে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি উপমহাদেশের মধ্যে প্রথম।’মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘আমাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে গড়ে ইউনিটপ্রতি উৎপাদন খরচ পড়ছে ১০ থেকে ১২ টাকার মতো। সেই হিসাবে নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানি আমাদের জন্য অনেকটাই সাশ্রয়ী হবে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ও দর-কাষাকষি শেষে নেপাল থেকে ভারতের মুজাফফরপুর সাবস্টেশন পর্যন্ত প্রতি ইউনিট এনার্জি ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬.৪০ মার্কিন সেন্টস। প্রতি ডলারের দাম ১১৭ টাকা হিসাব করলে বাংলাদেশি সাড়ে সাত টাকা হয়। ভারতে ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কম্পানি এনপিটিপিসি, বিদ্যুৎ ভেপার নিগাম লিমিটেডের (এনভিভিএন) ট্রেডিং মার্জিন ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে ভারতীয় রুপিতে ০.০৫৯৫ রুপি। গত ২১ মার্চের হিসাবে প্রতি রুপি এক টাকা ৪১ পয়সা হিসাব করলে টাকায় দাঁড়ায় ৮৪ পয়সা। এ ছাড়া রয়েছে ভারতের সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশনের নির্ধারিত ট্রান্সমিশন চার্জ। সব কিছু নিয়ে নেপালের জলবিদ্যুৎ দেশে আনতে ইউনিটপ্রতি খরচ পড়বে ৯ টাকার মতো।

বিদ্যুৎ ক্রয়ের এ প্রস্তাবটি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘সব পক্ষের আলোচনা শেষে এখন নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই আমদানি শুরু হবে। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হলে ভারতের ওপর দিয়ে তাদের সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করতে হবে। ভারত এতে সম্মত রয়েছে।’

বিপিডিবি সূত্র জানায়, ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ফলে দুই দিক থেকেই লাভবান হবে বাংলাদেশ। যেমন শীতের যে সময়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়, তখন নেপালে থাকে শুষ্ক মৌসুম। দেশটির তখন বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা থাকে। ওই সময় নেপাল বরং বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারবে।এদিকে অনুষ্ঠিত ৩০তম অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটিতেও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিপিডিবি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ কিনবে।

নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে সরকার। নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সীমান্ত না থাকায় দেশটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতীয় সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করতে হবে। ফলে নেপালের বিদ্যুৎ আমদানি করতে ভারতকে দিতে হবে ট্রেডিং মার্জিন ও সঞ্চালন চার্জ। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।

পাঁচ বছরে ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি টাকা -নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানিতে

জানা গেছে, নেপাল ও বাংলাদেশ ২০১৮ সালে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। নেপাল ও ভারতে বিদ্যুৎ বিক্রির সুযোগ রেখে নেপালের সুঙ্কোশি-৩ প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশ।

ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে ২৬৫৬ মেগাওয়াট

২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রথম ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ। বর্তমানে ভারত থেকে দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে সরকার। ভারতের বহরমপুর থেকে ভেড়ামারা সাবস্টেশনের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট এবং কুমিল্লা দিয়ে ভারতের সূর্যনগর থেকে আরো ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানি গ্রুপ নির্মাণ করেছে এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্র। ভারতের বেসরকারি কম্পানির এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে সরকার।