চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউজ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
হারুন-অর-রশীদ ছিলেন ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট। তার মৃত্যুর বিষয়টি ডেসটিনি মাল্টি পারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটির সভাপতি প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামের চিকিৎসকদের একটি দল চট্টগ্রাম ক্লাবে এসে সাবেক সেনাপ্রধানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে তারা সাবেক সেনাপ্রধানকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে এটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে তারা জানিয়েছেন।
সকালে তার একটা মিটিং ছিল। তার মোবাইলে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি রেসপন্স করছিলেন না। এরপর দরজায় নক করা হলেও কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে বারান্দায় গ্লাসের দরজা ভেঙে বিছানায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত তার মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তা ক্রাইম সিন ইউনিটসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন উপস্থিত রয়েছেন। পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এম হারুন-অর-রশীদ ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বাসিন্দা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়।
২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে আসেন হারুন। ২০০২ সালের জুনে অবসরে যাওয়ার পর সরকার তাকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও দিয়েছিল।
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাবেক মহাসচিব হারুন-অর-রশিদ ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দেন ২০০৬ সালে। পরের কয়েক বছরে আরও বহু ক্ষেত্রে ডেসটিনির ব্যবসা বিস্তৃত হতে দেখা যায়।
কিন্তু জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠলে ২০১২ সালে হারুনকে কারাগারেও যেতে হয়।