আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির সদস্যপদ নেন তিনি। স্নিগ্ধ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ’র যমজ ভাই।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ভেরিভায়েড ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কারণ জানিয়েছেন স্নিগ্ধ। তার ফেসবুক স্ট্যাটাস পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
স্নিগ্ধ লিখেছেন, আসসালামু আলাইকুম আমি মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। জুলাইয়ের পর থেকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানের যে জোয়ার উঠেছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, সেই তরুণদের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমিও সামাজিকভাবে নানা কার্যক্রমের প্রতিনিধিত্ব করেছি। পাশাপাশি তরুণদের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে রাজনৈতিক পরিবর্তনের যে প্রচেষ্টা চলছে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছাপোষণ করেছি।
তিনি লিখেছেন, আপনারা জানেন যে আমি বা আমার ভাইদের কেউই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না, মুগ্ধ একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। তাই আমি মনে করি মুগ্ধসহ সকল শহীদ কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, তারা সকল মানুষ এবং দেশের সম্পদ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবং এই নতুন বাস্তবতায় সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত জায়গা থেকে বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করছি এবং সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে চাই। অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম থেকে জুলাইকে নানাভাবে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি, এখন সময় এসেছে রাজনৈতিকভাবে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার।
তিনি আরও লিখেছেন, আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার পেছনে অন্যতম কয়েকটি কারণ হলো— সর্বোচ্চ জায়গা থেকে জুলাইকে প্রতিনিধিত্ব করা। জুলাই শহীদ, আহত যোদ্ধা, শহীদ পরিবার এবং সর্বোপরি জুলাইয়ের ভয়েস হয়ে ওঠা, রাজনীতিতে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করা এবং
বাংলাদেশপন্থি ও জুলাইপন্থি সকল অংশীজনের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলতে যোগদান কারার পেছনে আমার কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। তাছাড়া বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা ২০২৩ এর অনেক জায়গা আছে যেগুলো নিয়ে সরাসরি কাজ করতে আমি আগ্রহী।
স্নিগ্ধ লিখেছেন, দ্বিতীয়ত আমি মনে করি সকল পরিসরে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন। তাই আমি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হচ্ছি। এতে করে জুলাইয়ের ঐক্য শক্তিশালী এবং দীর্ঘায়িত হবে বলে আমি মনে করি। তাছাড়া বিএনপির সন্মানিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান চাচ্ছেন যে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করি, যা আমারও অন্যতম রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার একটি। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দল এবং তরুণদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারব বলে আমি মনে করি।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিখেছেন, তবে সর্বোপরি আমি সকল রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশ ও জুলাইপন্থি সকলের সাথে কাজ করে যেতে চাই। রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মান আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য। আমার এই পথচলায় সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করছি। মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ জনমানুষের সকল সংগ্রাম চির অম্লান হোক।
শেষে তিনি লিখেছেন, আরেকটি বিষয়, এতদিন যত দায়িত্ব আমি পালন করেছি, সব দায়িত্ব নিষ্ঠা এবং সততার সাথে পালন করেছি। যদি কোনো অভিযোগ থাকে, দয়া করে অভিযোগে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রমাণসহ উপস্থাপন করবেন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে এতটুকু সংস্কার তো আমরা আশাই করতে পারি।

অনলাইন ডেস্ক 




















