সীমান্তবর্তী শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা-কাটাবারি প্রস্তাবিত পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। গতকাল সোমবার সকালে এই এলাকায় পরিদর্শনে আসেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা। এসময় এই অঞ্চলের হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন ‘মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। তাই কী করলে সমস্যার সমাধান হবে, তা মানুষকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের কতটুকু জায়গা হাতির উপযোগী আছে এবং কতটুকু জায়গা হাতির উপযোগী করতে পারলে হাতি আর লোকালয়ে বের হয়ে আসবে না, আমরা তা নিয়ে কাজ করব। হাতি মারা যাবে এটা যেমন কাম্য নয়, তেমনি মানুষ মারা যাবে এটাও কাম্য নয়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর দুই সপ্তাহেই ১২টি হাতি মারা গেছে। এটা কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার না। এই সমস্যাটা বহুদিন যাবৎ অবহেলিত হতে হতে চরমে পৌঁছে গেছে। যার ফলটা এখন আমরা দেখছি। যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে হাতি-মানুষের সহাবস্থান সৃষ্টি করা।’ গারো পাহাড়ে হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসন করে হাতির জন্য অভয়ারণ্য গড়ে তোলার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা।
সূত্র জানায়, শেরপুরের গারো পাহাড়সংলগ্ন তিনটি উপজেলার তিনটি রেঞ্জে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে প্রায় ২১ হাজার একর বনভূমি রয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন এই বনাঞ্চলের ২২৩ একর খাস জমিতে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়। বন বিভাগ এই উদ্যোগে আপত্তি জানালে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। বনবিভাগের আপত্তিকর প্রেক্ষাপটেই গতকাল সোমবার এই এলাকা পরিদর্শনে যান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এসময় তাঁর সঙ্গে অন্যানের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মো. নুরুল কবীর, শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মো. মহমুদুর রহমান, নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি, বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. রেজা খান প্রমুখ।
উপদেষ্টা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জনতার ভূল বুঝা বুঝিতে কেন্দ্রের পক্ষে ও বিপক্ষে থাকা দুই পক্ষ উপদেষ্টার গাড়ির সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে উত্তেজিত জনতা উপদেষ্টার গাড়ির সঙ্গে থাকা সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
এতে শেরপুরে কর্মরত অন্তত ছয় সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হামলায় এখন টিভির সাংবাদিক জাহিদুল খান সৌরভ, সময় টিভির ভিডিও জার্নালিস্ট বাবু চক্রবর্তী, বাংলা টিভির নাঈম ইসলাম, বাংলাদেশের খবরের শাহরিয়ার শাকিরসহ আরও দুইজন আহত হন।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয় সাংবাদিক ও সচেতন মহল।