ময়মনসিংহ , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

৩ লাশের সন্ধান, নৃশংসতার লোমহর্ষক তথ্য দিলো পুলিশ

  • Md. Raduan Ahammed
  • আপডেট সময় ০৩:৫৫:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪
  • ১৫১ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাকচর নয়াপাড়া গ্রামে নারী ও তার দুই সন্তানের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ২২-মে ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের মাঠ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সেখানে দুই শিশুর খণ্ডিত লাশ টানাটানি করছিল কুকুর এবং আরেকটি গর্তে পুঁতে রাখা ছিল তাদের মায়ের লাশ।

নিহতরা হলেন- উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের স্ত্রী আমেনা বেগম (৩০) ও তার দুই ছেলে আবু বক্কর (৪) ও আনাস (২)। বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দূরে তাদের লাশ পাওয়া গেছে গর্তের মধ্যে। ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী পলাতক। পুলিশের ধারণা, স্ত্রী ও দুই শিশুপুত্রকে হত্যার পর পুঁতে রেখে সে পালিয়ে গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত আমেনা বেগম সাখুয়া ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামের আবদুল খালেকের মেয়ে। ছয় বছর আগে আলী হোসেনের সঙ্গে তার ফুফাতো বোন আমেনার বিয়ে হয়। আমেনা অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন। আলী হোসেন কোনো কাজ করতেন না, ঘুরে বেড়াতেন। একটি বেসরকারি  ঋণ দানকারী সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল সে। ঋণের কিস্তির জন্য প্রায় সময় আমেনাকে চাপ দিতেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গার্মেন্টসে যাবে বলে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিদায় নেন আমেনা। এরপর রাত থেকে দুই সন্তানসহ তার খোঁজ মিলছিল না।

মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলের ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দূরে পার্শ্ববর্তী কাজিগ্রামের রাস্তার পাশে সোহরাব নামে ব্যক্তি শিশুর একটি হাত দেখেন। এ সময় আশপাশে কয়েকটি কুকুরও ঘুরতে দেখেন তিনি। পরে কাউকে কিছু না জানিয়েই সেখানে হাতটি মাটিচাপা দিয়ে চলে যান সোহরাব। দুপুরের দিকে মেহেদী ও সাব্বির নামে দুই যুবক নামাজ আদায়ের জন্য কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের হাইঞ্জা মড়লের বাড়ির দক্ষিণ পাশের মসজিদে যাওয়ার পথে তারা দুর্গন্ধ পান। এ সময় তারা দেখেন, মসজিদের পশ্চিমে ধানক্ষেতের পাশে কিছু একটা নিয়ে কয়েকটি কুকুর টানাটানি করছে। এগিয়ে গিয়ে দেখেন, দুই স্থানে দুটি শিশুর লাশের খণ্ডিত অংশ পড়ে আছে। তারা একটু সামনে এগিয়ে দেখেন, পাশের একটি গর্তের মধ্যে থেকে এক নারীর হাত বের হয়ে আছে। তাদের ডাকাডাকিতে সেখানে লোকজন জড়ো হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ত্রিশাল থানার পুলিশ।

বিকেলে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শামীম হোসেনসহ র‍্যাবের একটি দল। এরপর পুলিশ মাটি খুঁড়ে ওই নারী এবং আশপাশে ছড়িয়ে থাকা দুই শিশুর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। বিকেলে তিনটি লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে পরিচয় শনাক্তে আশপাশের এলাকায় তদন্ত শুরু করে। অনেক চেষ্টার পর রাত ৯টার দিকে তাদের পরিচয় মেলে। ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে আমেনার স্বামী আলী হোসেন পলাতক। ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী ও সন্তানদের শ্বাসরোধে হত্যার পর পুঁতে রাখে সে। এরপর শিয়াল-কুকুরে লাশ টেনে বের করে। আলী হোসেনকে আটকের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

৩ লাশের সন্ধান, নৃশংসতার লোমহর্ষক তথ্য দিলো পুলিশ

আপডেট সময় ০৩:৫৫:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাকচর নয়াপাড়া গ্রামে নারী ও তার দুই সন্তানের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ২২-মে ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের মাঠ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সেখানে দুই শিশুর খণ্ডিত লাশ টানাটানি করছিল কুকুর এবং আরেকটি গর্তে পুঁতে রাখা ছিল তাদের মায়ের লাশ।

নিহতরা হলেন- উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের স্ত্রী আমেনা বেগম (৩০) ও তার দুই ছেলে আবু বক্কর (৪) ও আনাস (২)। বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দূরে তাদের লাশ পাওয়া গেছে গর্তের মধ্যে। ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী পলাতক। পুলিশের ধারণা, স্ত্রী ও দুই শিশুপুত্রকে হত্যার পর পুঁতে রেখে সে পালিয়ে গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত আমেনা বেগম সাখুয়া ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামের আবদুল খালেকের মেয়ে। ছয় বছর আগে আলী হোসেনের সঙ্গে তার ফুফাতো বোন আমেনার বিয়ে হয়। আমেনা অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন। আলী হোসেন কোনো কাজ করতেন না, ঘুরে বেড়াতেন। একটি বেসরকারি  ঋণ দানকারী সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল সে। ঋণের কিস্তির জন্য প্রায় সময় আমেনাকে চাপ দিতেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গার্মেন্টসে যাবে বলে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিদায় নেন আমেনা। এরপর রাত থেকে দুই সন্তানসহ তার খোঁজ মিলছিল না।

মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলের ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দূরে পার্শ্ববর্তী কাজিগ্রামের রাস্তার পাশে সোহরাব নামে ব্যক্তি শিশুর একটি হাত দেখেন। এ সময় আশপাশে কয়েকটি কুকুরও ঘুরতে দেখেন তিনি। পরে কাউকে কিছু না জানিয়েই সেখানে হাতটি মাটিচাপা দিয়ে চলে যান সোহরাব। দুপুরের দিকে মেহেদী ও সাব্বির নামে দুই যুবক নামাজ আদায়ের জন্য কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের হাইঞ্জা মড়লের বাড়ির দক্ষিণ পাশের মসজিদে যাওয়ার পথে তারা দুর্গন্ধ পান। এ সময় তারা দেখেন, মসজিদের পশ্চিমে ধানক্ষেতের পাশে কিছু একটা নিয়ে কয়েকটি কুকুর টানাটানি করছে। এগিয়ে গিয়ে দেখেন, দুই স্থানে দুটি শিশুর লাশের খণ্ডিত অংশ পড়ে আছে। তারা একটু সামনে এগিয়ে দেখেন, পাশের একটি গর্তের মধ্যে থেকে এক নারীর হাত বের হয়ে আছে। তাদের ডাকাডাকিতে সেখানে লোকজন জড়ো হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ত্রিশাল থানার পুলিশ।

বিকেলে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শামীম হোসেনসহ র‍্যাবের একটি দল। এরপর পুলিশ মাটি খুঁড়ে ওই নারী এবং আশপাশে ছড়িয়ে থাকা দুই শিশুর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। বিকেলে তিনটি লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে পরিচয় শনাক্তে আশপাশের এলাকায় তদন্ত শুরু করে। অনেক চেষ্টার পর রাত ৯টার দিকে তাদের পরিচয় মেলে। ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে আমেনার স্বামী আলী হোসেন পলাতক। ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী ও সন্তানদের শ্বাসরোধে হত্যার পর পুঁতে রাখে সে। এরপর শিয়াল-কুকুরে লাশ টেনে বের করে। আলী হোসেনকে আটকের পর বিস্তারিত জানা যাবে।