নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বাংলাদেশের শ্রমিকদের কল্যাণ ও মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ শ্রম ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নে শ্রম আইনকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে শ্রম ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
সরকার একজন শ্রম অধিকারকর্মীর নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন শ্রম অধিকার সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। এই কমিশন আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের সব শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে শ্রমজীবী মানুষের সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় শ্রম সেক্টরের সমস্যাগুলো পরীক্ষান্তে মার্চ ২০২৫ এর মধ্যে সুপারিশ জমা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকার ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং আন্তর্জাতিক কনভেনশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে শ্রম আইন সংশোধন করতে ট্রেড ইউনিয়ন, নিয়োগকর্তা এবং উন্নয়ন অংশীদারদের বিশেষ করে আইএলওসহ সব স্টেকহোল্ডারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে। আমাদের শ্রম আইন সংশোধনের একটি মূল দিক হলো ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন ও কার্যক্রমের সহজিকরণ। শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব এবং সম্মিলিত দর কষাকষির ওপর গুরুত্বারোপ করে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনকে আরও সহজ এবং স্বচ্ছ করার ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। এছাড়া নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিন করা হচ্ছে মর্মে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন।
বাংলাদেশ শ্রম আইন এর চলমান সংশোধনী বিষয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন সদস্যদের গোপনীয়তা বজায় রাখার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া শ্রম সংক্রান্ত মামলা জট কমাতে ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’কে কার্যকর করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অন্যান্য মামলাসমূহ পরীক্ষা নিরীক্ষান্তে নিষ্পত্তির কার্যক্রম চলমান আছে।
আগামী ১০ থেকে ২০ মার্চ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ৩৫৩তম অধিবেশনের আগে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের শ্রম ইস্যুতে এ অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।