দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্লাসরুম, অধ্যক্ষের রুমসহ বেশ কয়েকটি একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেছেন, আমরা বিগত আট মাস ধরে সরকারকে সময় দিয়ে যাচ্ছি। আরও সময় দিতে চাই। সরকারের গঠিত কমিটির সঙ্গে আমাদের তিনবার বৈঠক হয়েছে। তবে ফলপ্রসূ কিছু দেখছি না। তাই আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্লাস পরীক্ষা ও সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এ সময় প্রতিনিধিরা বলেন, আমরা জনদুর্ভোগ বা সহিংস কর্মকাণ্ডে যাব না। আমরা শান্তিপূর্ণ শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের দাবি ৬টা। তার মধ্যে কয়েকটি দাবি দ্রুত পূরণ করতে হবে। পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে।
কারিগরি সংস্থার কমিশনের মাধ্যমে এই দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো-
কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এ পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।