বক্তব্যের একপর্যায়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড়পর্যবেক্ষণে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে উল্লেখ করতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আপনারা এখানে অনেক কষ্টে আছেন বুঝি। এর চেয়েও জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তারা জন্য সবাই দোয়া করুন। এ সময় তার চোখের পানি মুছতে দেখা যায়। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রের প্রতীক, যিনি স্বৈরাচার থেকে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করতে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন, যিনি কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টকে সংবিধানের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন, যিনি দেশের মানুষের আর্থিক মুক্তির জন্য কাজ করেছেন, ওই সময় বিদেশি পত্রিকাগুলোতে লেখা হতো ইমাজিং টাইগার, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে একটা বাঘ বেড়িয়ে আসছে বাংলাদেশ- কী দুর্ভাগ্য সেই নেত্রী আজ বিনা চিকিৎসায় বন্দি অবস্থায় মৃত্যুশয্যায়।’তিনি বলেন, ‘আমরা দোয়া করি আল্লাহ যেন এই প্রিয় নেত্রীর প্রাণভিক্ষা দেন। আমরা যেন তার নেতৃত্বে আবার ঐক্যবদ্ধভাবে জ্বলে উঠতে পারি। যে ভয়াবহ দানব রাষ্ট্রযন্ত্রকে শেষ করে দিচ্ছে, তাকে যেন পরাজিত করতে পারি। যেন আমরা আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি। শুধুমাত্র দোয়া নয়; তার চিকিৎসার জন্য আমাদের যা যা করা প্রয়োজন সেই চেষ্টাই আমাদের করতে হবে।
ফখরুল: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি
মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, সেই প্রতিহিংসার কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে, তাকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা নির্বাচিত সরকার। কিন্তু আমরা বারবার দেখছি, তারা কোনো মতেই নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসে না; যখনই ক্ষমতায় আসে জোর করে প্রহসনের নির্বাচন করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে। এরা এখনও জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। বাংলাদেশের মানুষের অধিকারগুলো একেক করে খুন করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়েছে, বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়েছে, মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এমনকি মানুষের বেঁচে থাকার যে ন্যুনতম অধিকার, সেগুলো তারা কেড়ে নিয়েছে। এই সরকার অবৈধ, তারা সমোস্ত দেশটাকে বিক্রি করে দিয়েছে।পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াসহ কয়েকজনের দুর্নীতি সংক্রান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার দুর্নীতির কাহিনী সম্প্রতি বেরিয়ে আসছে। পুলিশের অ্যাসোসিয়েশন থেকে হুমকি দিয়ে একটা স্টেটমেন্ট দেওয়া হয়েছে যে, এই সত্যপ্রকাশ করা যাবে না; এতে নাকি তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়। কিছু পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে দেশের মানুষসহ সারা পৃথিবী জানে কিভাবে তারা এই অবৈধ সরকারের সাথে যোগসাজশ করে তারা বিত্ত-বৈভব দুর্নীতি পাহাড় গড়ে তুলেছে। শুধুমাত্র তাই নয়; তারা রাষ্ট্র ষড়যন্ত্রকে ধ্বংস করেছে,গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে-এর দায় তাদেরকে নিতে হবে।