চাঁদপুরে আজম খান নামে এক বিএনপি নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। দুপুরে এ ঘটনার পর বিকেলে ওই এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে পক্ষ পাল্টাপাল্টি অন্যপক্ষকে দায়ী করছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গত মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের কুমিল্লা সড়ক সংলগ্ন সিংহপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। জেলা বিএনপির কিছু নেতাকর্মী এ হামলা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন আজম খান। তার দাবি, হামলায় অন্তত ১৫-২০ জন আহত হয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির দুপক্ষে স্থানীয় নেতাদের দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার দিন শহরের হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার পথসভার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলটির দুপক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পথসভাকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে পাহারা বসানোর অভিযোগ উঠেছে এক পক্ষের বিরুদ্ধে।
বিএনপি নেতা বলেন, আমি প্রচারণায় এসে কখনও বলিনি, এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাই। আমি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে ৩১ দফার কথা বলছি। বিএনপির মধ্যে যারা এত বছর সুসংগঠিত ছিল না, তাদের সুসংগঠিত করছি। যাতে করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ জয় লাভ করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই ঘটনা জেলা বিএনপির একাংশ থেকে করা হয়েছে। বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের ছেলেরা এতে জড়িত ছিল।
এদিকে এ ঘটনার পর শহরের বিভিন্ন অবস্থান নেন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে শহরের প্রবেশমুখ চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সড়ক, চাঁদপুর-হাইমচর সড়ক, ওয়ারলেস মোড়ে তারা অবস্থান নিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, বিকেলেও সিংহপাড়ায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোন গেছে। তবে এতে কেউ আহত হননি।
এদিকে আজম খানের বাড়িতে ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর জেল-জুলুম ভোগ করে জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রবাসীকল্যাণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ জেলা বিএনপিকে সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে দলে কারও সঙ্গে তার বিরোধ বা দ্বন্দ্ব নেই। হঠাৎ কয়েক দিন আগে উড়ে এসে জুড়ে বসে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি শুরু করছেন আজম খান।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আজম খান জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মনোনীত হয়ে আজ পর্যন্ত জেলা বা পৌর বিএনপির কারও সঙ্গে না বসে দলের শত্রু ও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজনকে টাকাপয়সা দিয়ে দলের ভেতর বিশৃঙ্খলাসহ চরম ক্ষতি করছেন। আজ তার বাড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে, এটা তার নিজের লোকেরাই করেছে। এখন তিনি জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের দোষারোপ করছে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফুর রহমান বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কতজন আহত হয়েছে, তা বলতে পারবো না। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করা হয়নি।