ময়মনসিংহ , শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
ওসমান হাদি মারা গেছেন তাহসিনুল কুরআন হিফজ মাদ্রাসার বাৎসরিক পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণী সম্পন্ন সর্বশেষ তথ্য জানাল ইনকিলাব মঞ্চ হাদির শারীরিক অবস্থার ধার করে নয়, রিজার্ভ নিজেদেরকেই বাড়াতে হবে জানিয়েছেন গভর্নর খালেদা জিয়াকে নিয়ে আমরা আশাবাদী, তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বললেন ডা. জাহিদ জেআইসি সেলে গুম-নির্যাতন:আজ শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন সৌদিতে অনুমতি ছাড়া নির্বাচনি সভা, বাংলাদেশি বেশ কয়েকজন আটক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক আনিস আলমগীরের মুক্তি চায় সংসদ নির্বাচন : চার লাখ ৮৩ হাজার ছাড়ালো প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন মানবিক বিপর্যয় চরমে শীতকালীন ঝড়ে গাজায়
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

নিজের গাড়িতে জিম্মি যুগ্ম সচিবকে, ৬ লাখ টাকা দাবি চালকের

  • ডিজিটাল রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১০:১৫:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

পরিকল্পনা কমিশনের এক যুগ্ম সচিবকে তার নিজের সরকারি গাড়ির ভেতরে জিম্মি করে ৬ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন তারই চালক।

গত বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা ভুক্তভোগী যুগ্ম সচিবের নাম মাকসুদা হোসেন। অভিযুক্ত গাড়ি চালকের নাম আবদুল আউয়াল (৪০)।

ওই কর্মকর্তাকে সরকারি গাড়িতে আটকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘোরান তিনি। একপর্যায়ে ওই যুগ্ম সচিবের কর্মস্থল পরিকল্পনা কমিশনে আসেন। তখন তাকে আটক করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

অভিযুক্ত চালক আবদুল আউয়াল দুই মাস ধরে ওই কর্মকর্তার গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তার বাড়ি বগুড়া জেলায়। এর আগে পরিকল্পনা কমিশনের আরেক যুগ্ম সচিবের গাড়ি চালাতেন তিনি।

টাকা নেওয়ার জন্য চালক তাকে জিম্মি করেছিলেন বলে জানান মাকসুদা হোসেন।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, সকাল সোয়া আটটায় ধানমন্ডির বাসা থেকে গাড়িতে করে তিনি শেরেবাংলা নগর এলাকায় পরিকল্পনা কমিশনে নিজ কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন। চালক আবদুল আউয়াল চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে এসে গাড়ি কমিশনে না নিয়ে বিজয় সরণির দিকে যেতে থাকেন।

গাড়ি কেন অন্যদিকে নিচ্ছেন, জানতে চাইলে জবাব দেন না চালক। মহাখালী, বনানী হয়ে বিমানবন্দর সড়কের দিকে গাড়ি চালতে থাকেন তিনি। চালক যে তাকে অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছেন, সেটি নিজের এক সহকর্মীকে জানান মাকসুদা হোসেন।

একপর্যায়ে মাকসুদা হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিতে গেলে চালক জোর করে তার কাছ থেকে মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেন বলে জানান যুগ্ম সচিব।

তিনি বলেন, মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে চালক গাড়ির দরজা লক করে দেন। এরপর গাড়ি উত্তরার দিয়াবাড়ি ঘুরে বেড়িবাঁধ হয়ে সাভারের হেমায়েতপুরের দিকে চালাতে থাকেন। পরে গাড়ি ঘুরিয়ে আবার দারুস সালাম হয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দুপুর ১২টার দিকে পরিকল্পনা কমিশনের সামনে আসেন।

মাকসুদা হোসেন বলেন, কী কারণে এলোমেলো গাড়ি চালাচ্ছেন, কেন তাকে জিম্মি করা হয়েছে, জানতে চাইলেও কোনো কথা বলেননি চালক।

চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের সামনের মাঠে (সাবেক বাণিজ্য মেলা) গাড়ি থামিয়ে এবার যুগ্ম সচিবের কাছে নিজের মায়ের চিকিৎসার জন্য ছয় লাখ টাকা দাবি করেন চালক। তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা চান তিনি। তখন যুগ্ম সচিব বলেন, এই মুহূর্তে তার কাছে টাকা নেই। অফিসে গেলে টাকা দেওয়া হবে।

এ কথা বলার পর তাকে কমিশনের ভেতরে নিয়ে আসেন চালক আবদুল আউয়াল। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করেন। বিকাল পর্যন্ত চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

একজন যুগ্ম সচিবকে জিম্মি করা হয়েছে, এই খবরে সকাল থেকে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা ওই গাড়ি ট্র্যাক করতে থাকে।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব শাকিল আখতার বলেন, চালক একজন মাদকাসক্ত বলে তারা জানতে পেরেছেন। ওই কর্মকর্তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন চালক। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

ওসমান হাদি মারা গেছেন

নিজের গাড়িতে জিম্মি যুগ্ম সচিবকে, ৬ লাখ টাকা দাবি চালকের

আপডেট সময় ১০:১৫:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

পরিকল্পনা কমিশনের এক যুগ্ম সচিবকে তার নিজের সরকারি গাড়ির ভেতরে জিম্মি করে ৬ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন তারই চালক।

গত বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা ভুক্তভোগী যুগ্ম সচিবের নাম মাকসুদা হোসেন। অভিযুক্ত গাড়ি চালকের নাম আবদুল আউয়াল (৪০)।

ওই কর্মকর্তাকে সরকারি গাড়িতে আটকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘোরান তিনি। একপর্যায়ে ওই যুগ্ম সচিবের কর্মস্থল পরিকল্পনা কমিশনে আসেন। তখন তাকে আটক করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

অভিযুক্ত চালক আবদুল আউয়াল দুই মাস ধরে ওই কর্মকর্তার গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তার বাড়ি বগুড়া জেলায়। এর আগে পরিকল্পনা কমিশনের আরেক যুগ্ম সচিবের গাড়ি চালাতেন তিনি।

টাকা নেওয়ার জন্য চালক তাকে জিম্মি করেছিলেন বলে জানান মাকসুদা হোসেন।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, সকাল সোয়া আটটায় ধানমন্ডির বাসা থেকে গাড়িতে করে তিনি শেরেবাংলা নগর এলাকায় পরিকল্পনা কমিশনে নিজ কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন। চালক আবদুল আউয়াল চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে এসে গাড়ি কমিশনে না নিয়ে বিজয় সরণির দিকে যেতে থাকেন।

গাড়ি কেন অন্যদিকে নিচ্ছেন, জানতে চাইলে জবাব দেন না চালক। মহাখালী, বনানী হয়ে বিমানবন্দর সড়কের দিকে গাড়ি চালতে থাকেন তিনি। চালক যে তাকে অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছেন, সেটি নিজের এক সহকর্মীকে জানান মাকসুদা হোসেন।

একপর্যায়ে মাকসুদা হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিতে গেলে চালক জোর করে তার কাছ থেকে মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেন বলে জানান যুগ্ম সচিব।

তিনি বলেন, মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে চালক গাড়ির দরজা লক করে দেন। এরপর গাড়ি উত্তরার দিয়াবাড়ি ঘুরে বেড়িবাঁধ হয়ে সাভারের হেমায়েতপুরের দিকে চালাতে থাকেন। পরে গাড়ি ঘুরিয়ে আবার দারুস সালাম হয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দুপুর ১২টার দিকে পরিকল্পনা কমিশনের সামনে আসেন।

মাকসুদা হোসেন বলেন, কী কারণে এলোমেলো গাড়ি চালাচ্ছেন, কেন তাকে জিম্মি করা হয়েছে, জানতে চাইলেও কোনো কথা বলেননি চালক।

চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের সামনের মাঠে (সাবেক বাণিজ্য মেলা) গাড়ি থামিয়ে এবার যুগ্ম সচিবের কাছে নিজের মায়ের চিকিৎসার জন্য ছয় লাখ টাকা দাবি করেন চালক। তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা চান তিনি। তখন যুগ্ম সচিব বলেন, এই মুহূর্তে তার কাছে টাকা নেই। অফিসে গেলে টাকা দেওয়া হবে।

এ কথা বলার পর তাকে কমিশনের ভেতরে নিয়ে আসেন চালক আবদুল আউয়াল। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করেন। বিকাল পর্যন্ত চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

একজন যুগ্ম সচিবকে জিম্মি করা হয়েছে, এই খবরে সকাল থেকে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা ওই গাড়ি ট্র্যাক করতে থাকে।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব শাকিল আখতার বলেন, চালক একজন মাদকাসক্ত বলে তারা জানতে পেরেছেন। ওই কর্মকর্তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন চালক। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।