ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বঙ্গোপসাগরে সোমবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে ৫৮ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। মাছের প্রজনন বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এর আগে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা শুরু হলেও এবার সাত দিন কমিয়ে ১১ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
আন্তর্জাতিক মৎস্য গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের সাবেক গবেষক ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বিষয়টিকে যুগান্তকারী বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘এটা দেশের সামুদ্রিক মৎস্য খাতের জন্য সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এমন দাবি করে আসছিলাম। কারণ, আগে সরকার যে উদ্দেশে এই নিষেধাজ্ঞা দিত, তা দুই দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় প্রতিবেশী দেশকে লাভবান করত। এটা আমাদের মৎস্যসম্পদের জন্য একটি বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’
এদিকে সাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নিতে গিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ভোলার প্রায় ৬৫ হাজার নিবন্ধিত সাগরের জেলে। ইতোমধ্যে ফিশিংবোট জালসহ মাছ ধরার সব সরঞ্জামাদি নিয়ে তীরে ফিরে এসেছেন তারা। নিষেধাজ্ঞার শুরুতে সরকারি খাদ্য সহায়তার চালসহ ঋণের কিস্তি বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন কর্মহীন এসব জেলে। তাদের দাবি, প্রতিবছর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে উপার্জনের সুযোগ সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এর ফলে জেলেদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে। তবে জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রজননকালে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে পরবর্তী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এ কারণেই প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।