টিকটকের পর এবার যুক্তরাষ্ট্রে আইনি জটিলতায় পড়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মালিক মেটা। মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগ রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে প্রতিযোগিতা নষ্ট করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখতে নানা অপকৌশল নিয়েছে মেটা।
বিক্রি হতে পারে ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ , আইনি বিপাকে মেটা
যদি আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে মেটাকে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ বিক্রি করে দিতে বাধ্য করা হতে পারে—এমনটাই জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এফটিসি-এর দাবি, প্রতিযোগিতার জায়গায় উদ্ভাবন বা মানোন্নয়নের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিনে নেয়ার পথ বেছে নিয়েছে মেটা। ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণের উদ্দেশ্য ছিল তাদের সম্ভাব্য প্রতিযোগী হয়ে ওঠা ঠেকানো। মামলার নথিতে এফটিসি উল্লেখ করেছে, মেটা প্রতিযোগিতাকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে একের পর এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে কিনে নিয়েছে। এসব অধিগ্রহণ অবৈধ এবং অন্যায্য প্রতিযোগিতার কৌশলের অন্তর্ভুক্ত, যাতে নতুন প্ল্যাটফর্মগুলো বড় হয়ে উঠতে না পারে।
মামলাটির প্রস্তুতি চলছিল প্রায় দুই বছর ধরে। এর সূচনা হয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময়, যখন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের আইনপ্রণেতারাই মেটার একচেটিয়া বাজারদখল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মেটা এর আগেও মামলাটি থামানোর জন্য আদালতে ‘সংক্ষিপ্ত রায়ের’ আবেদন করেছিল ২০২৪ সালে, কিন্তু সে চেষ্টায় সফল হতে পারেনি।
আদালতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে মেটা বলেছে, তারা বর্তমানে টিকটক, এক্স, ইউটিউব ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো শক্ত প্রতিযোগীদের সঙ্গে লড়ছে। ফলে তাদের একচেটিয়া আধিপত্যের অভিযোগ ভিত্তিহীন। এছাড়া মেটা দাবি করেছে, ইনস্টাগ্রাম (২০১২) ও হোয়াটসঅ্যাপ (২০১৪) কেনার সময় সেই অধিগ্রহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর অনুমোদনেই হয়েছিল। এখন সেই সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে, যা ‘দ্বিচারিতার’ উদাহরণ বলে অভিযোগ মেটার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন এফটিসিকে আদালতে প্রমাণ করতে হবে যে মেটার গত দশকের কর্মকাণ্ড ব্যবহারকারীদের বিকল্পের সুযোগ কমিয়ে দিয়েছে কিনা কিংবা বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা ব্যাহত করেছে কিনা। এটাই মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক।