পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনি-বিসাউয়ে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালোকে গ্রেপ্তার করে একদল সেনা কর্মকর্তা ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়েছে। রাজধানী বিসাউয়ে গোলাগুলির শব্দ শোনার কিছুক্ষণ পরই সরকারি সূত্র বিবিসিকে এই তথ্য নিশ্চিত করে।
অভ্যুত্থানকারী সৈন্যরা ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশটির চলমান নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে এবং দেশের সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে প্রেসিডেন্ট এমবালো ফরাসি গণমাধ্যম ‘ফ্রান্স ২৪’–কে ফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।’
ডিসেম্বর ২০১৯-এ নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালো। ছবি: বিবিসি
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানকারী দলটির কর্মকর্তারা বলেন, গত রোববার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার কথা থাকলেও এখন তারা পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়াই স্থগিত করেছেন।
সেনারা দেশের সব সীমান্ত বন্ধ করার পাশাপাশি রাত্রিকালীন কারফিউও জারি করেছে। অভ্যুত্থানের পর পুরো বিসাউয়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং এতে করে সন্ধ্যা ৭টার আগে থেকেই শহর কার্যত ফাঁকা হয়ে যায়।
সেনেগাল ও গিনির মাঝখানে অবস্থিত গিনি-বিসাউ ১৯৭৪ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, রাজনীতিতে সামরিক হস্তক্ষেপ এবং মাদক চোরাচালানের জন্য পরিচিত। স্বাধীনতার পর দেশটিতে অভ্যুত্থান ও অভ্যুত্থানচেষ্টা হয়েছে অন্তত ‘৯ বার।’
অভ্যুত্থানের আগে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের ফল প্রকাশের কথা ছিল। এমবালো ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ফার্নান্দো দিয়াস— দুজনই নিজেদের বিজয় দাবি করেছিলেন। জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই দেশকে ‘নারকো-স্টেট’ বলে আখ্যা দিয়েছে, কারণ দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ইউরোপে কোকেন পাচারের গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হয়েছে দেশটি।
এই ঘটনায় পর্তুগাল দ্রুত সাংবিধানিক শাসন ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে এবং সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকতেও আহ্বান জানিয়েছে। গিনি-বিসাউ বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি এবং এর জনসংখ্যা ‘২০ লাখের বেশি।’

ডিজিটাল ডেস্ক 
























