রাজশাহীতে সাংবাদিকদের তালাবদ্ধ করে রাখার হুমকি দেওয়া জাতীয় যুবশক্তির দুই নেতাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ( ২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে সংগঠনের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) আসাদুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত কর্মকাণ্ডের দায়ে এই দুজনকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী দুই দিনের মধ্যে লিখিত এবং সশরীর উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম এবং সদস্যসচিব ডা. জাহেদুল ইসলাম নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার রাজশাহী পর্যটন মোটেলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নতুন জেলা কমিটির পরিচিতি সভা ছিল। সে সভা পণ্ড করতে যান মেহেদী হাসান ফারাবি ও সোয়াইব আহমেদসহ এনসিপির কয়েকজন নেতা-কর্মী।
তারা অভিযোগ তোলেন, এনসিপির জেলা কমিটির নতুন আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। তারা তার পদত্যাগ চান।
এ অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকেরা মোটেলের সম্মেলনকক্ষে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলছিলেন। প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালে সম্মেলনকক্ষের ভেতরে প্রবেশ করেন সোয়েব আহমেদ ও মেহেদী হাসান ফারাবি।
ঢুকেই সোয়েব বলেন, ‘ভাই, সাংবাদিক যারা আছেন, এইটা যদি এখনই বন্ধ না করেন, আপনাদেরসহ আমরা তালা মেরে দেব। আপনারা পায়খানা-প্রস্রাব সব এইখানে করতে হবে।’
পাশ থেকে ফারাবি বলেন, ‘এত লোক সব বাইরে বসে আছে। আপনারা ফাইজলামি করছেন এখানে, নাকি?’ সাংবাদিকেরা কিছু না বললে ফারাবি আবার বলেন, ‘ভাই চিল্লাচ্ছি, কানে যাচ্ছে না কথা?’
এরপর সোয়েব তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এখনই যদি বন্ধ না করেন এটা, আপনাদের সাংবাদিকদেরসহ কিন্তু আমরা তালা মেরে দেব।’
এরপরই সাংবাদিকেরা এসে এর প্রতিবাদ করেন। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাতেই বিবৃতি দেয় রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখা।
এ ছাড়া মঙ্গলবার রাজশাহী এডিটরস ফোরাম বিবৃতি দিয়ে এর নিন্দা জানায়।
সাংবাদিক সংগঠনগুলো এই ঘটনাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি এবং জুলাইয়ের চেতনাবিরোধী উল্লেখ করে অবিলম্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।

ডিজিটাল রিপোর্ট 
























