ময়মনসিংহ , রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন বললেন গয়েশ্বর

আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, তাহলে রাজনৈতিক মোড়টা ঘুরতে পারে, নির্বাচন বানচাল হতে পারে। সে জন্যই জাতীয় স্বার্থে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। 

শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্তৃক আয়োজিত সনাতনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ মুজিব বিহারি-বাঙালি দাঙ্গা লাগিয়ে, বিহারি-বাঙালি আলাদা করে ১৯৭০–এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিলেন এই অঞ্চলের লোকদের বাঙালি বানিয়ে। এ ধরনের ঘটনা ঘটানোরও পেছনে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পটু। দরকার হলে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে দেবে।’

তিনি আরও বলেন, কোনো মানুষই সাম্প্রদায়িক না, কোনো ধর্মই না। কিন্তু কখনো কোনো কিছু মোকাবিলা করার জন্য দাঙ্গা ফ্যাসাদ করাইতে হয়, যাতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আরেক দিকে চলে যায়। হোসেন মোহাস্মদ এরশাদও ৮৮ সালে এ কাজটা করেছিলেন।

কোনো মানুষ কিংবা ধর্ম সাম্প্রদায়িক নয় উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কখনো কোনো কিছু মোকাবিলা করার জন্য দাঙ্গা-ফ্যাসাদ করাতে হয়। যাতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আরেক দিকে চলে যায়। এইচ এম এরশাদও ’৮৮ সালে এ কাজটা করেছিলেন। বাংলাদেশে মুসলমান নয়, হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু, হিন্দুরাই হিন্দুদের ক্ষতি করে।

গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আমি হিন্দু–মুসলমানের ব্যবধান বুঝি না। আমি খারাপ আর ভালো লোকের ব্যবধান বুঝি। সৎ লোক–প্রতারকের ব্যবধান বুঝি। আমি সাম্প্রদায়িকতা পছন্দ করি না, অসাম্প্রদায়িক জীবন যাপন করতে পছন্দ করি।’

হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, বাংলাদেশে মুসলমান নয়, হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু, হিন্দুরাই, হিন্দুদের ক্ষতি করে। এক ভাই যায়, তিন ভাইয়ের জায়গা লিখে দিয়ে যায়। অনেক পুরোনো জমিদার বাড়িতে মন্দির আছে। কিন্তু মন্দির দেবোত্তর না। তাই যেখানে যত মন্দির আছে, সব মন্দির দেবোত্তর করা এবং সীমানা চিহ্নিত করা।

সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের লোক সংস্কৃতির মধ্যেও এই ধর্ম সমন্বয় আছে। হিন্দু, মুসলমান আমরা একটা বৃহত্তর সংস্কৃতির অংশ, আবার নিজ নিজ ধর্মের জন্য যে সংস্কৃতি সেই সংস্কৃতির মধ্যেও একটা সমন্বয় ছিল। এখানে কোনো প্রভেদ ছিল না, এখানে কোনো বিভেদ ছিল না। এটাকে শেখ হাসিনা ভাঙতে চেয়েছেন। দেখাতে চেয়েছেন এ দেশে বিভেদ-বিভাজনে ভরপুর। সুতরাং আমাকে সমর্থন করো। অন্য বিরোধী দল কাউকে সমর্থন করবেন না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলেই দেব মন্দির দেবালয় ভাঙা হয়েছে, প্রতিমা ভাঙা হয়েছে। কিন্তু যারা ধরা পড়েছেন তারা অধিকাংশই হচ্ছে আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো সংগঠনের লোক। আওয়ামী লীগ এখন পলাতক। শিশুদের রক্ত পান করে, কিশোরদের রক্ত পান করে রিকশাওয়ালা শ্রমিকদের রক্ত পান করে জনতার উত্তল তরঙ্গের যে ঢেউ সেই ঢেউের তোরে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। পালানোর পরেও কিন্তু উনার ষড়যন্ত্র কিন্তু থামছে না।

রিজভী বলেন, আজকে দেখছি বিবিসিতে তারা বলছে কলকাতায় আওয়ামী লীগের একটি অফিস নেওয়া হয়েছে। ওই অফিসে সব বড় বড় নেতাদের যাতায়াত ওখানে শুরু হয়েছে। কারণটা কি? আমাদের দেশের মানুষ ভাবছে যে কোনো কিছু সেখান থেকে করা হচ্ছে কিনা। একটা অত্যন্ত বড় ধরনের কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে কিনা এটা আজকে সবার মনের মধ্যে এই জিনিসটা ক্রিয়া করছে। যে একজন মেজর ধরা পড়ছে সে আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবে। এই ঘটনাগুলো কীসের? কলকাতায় কার্যালয় আর বাংলাদেশের ভেতরে এই সমস্ত ঘটনার যে যোগসূত্র নেই তা বলা যাবে না। মাস্টারমাইন্ড হয়ে শেখ হাসিনা সেইখান থেকে বাংলাদেশ বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করেছে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্ণা রায় দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম মহাসচিব মীর সরাফত আলী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী এবং জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন বললেন গয়েশ্বর

আপডেট সময় ১১:০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, তাহলে রাজনৈতিক মোড়টা ঘুরতে পারে, নির্বাচন বানচাল হতে পারে। সে জন্যই জাতীয় স্বার্থে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। 

শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্তৃক আয়োজিত সনাতনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ মুজিব বিহারি-বাঙালি দাঙ্গা লাগিয়ে, বিহারি-বাঙালি আলাদা করে ১৯৭০–এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিলেন এই অঞ্চলের লোকদের বাঙালি বানিয়ে। এ ধরনের ঘটনা ঘটানোরও পেছনে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পটু। দরকার হলে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে দেবে।’

তিনি আরও বলেন, কোনো মানুষই সাম্প্রদায়িক না, কোনো ধর্মই না। কিন্তু কখনো কোনো কিছু মোকাবিলা করার জন্য দাঙ্গা ফ্যাসাদ করাইতে হয়, যাতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আরেক দিকে চলে যায়। হোসেন মোহাস্মদ এরশাদও ৮৮ সালে এ কাজটা করেছিলেন।

কোনো মানুষ কিংবা ধর্ম সাম্প্রদায়িক নয় উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কখনো কোনো কিছু মোকাবিলা করার জন্য দাঙ্গা-ফ্যাসাদ করাতে হয়। যাতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আরেক দিকে চলে যায়। এইচ এম এরশাদও ’৮৮ সালে এ কাজটা করেছিলেন। বাংলাদেশে মুসলমান নয়, হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু, হিন্দুরাই হিন্দুদের ক্ষতি করে।

গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আমি হিন্দু–মুসলমানের ব্যবধান বুঝি না। আমি খারাপ আর ভালো লোকের ব্যবধান বুঝি। সৎ লোক–প্রতারকের ব্যবধান বুঝি। আমি সাম্প্রদায়িকতা পছন্দ করি না, অসাম্প্রদায়িক জীবন যাপন করতে পছন্দ করি।’

হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, বাংলাদেশে মুসলমান নয়, হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু, হিন্দুরাই, হিন্দুদের ক্ষতি করে। এক ভাই যায়, তিন ভাইয়ের জায়গা লিখে দিয়ে যায়। অনেক পুরোনো জমিদার বাড়িতে মন্দির আছে। কিন্তু মন্দির দেবোত্তর না। তাই যেখানে যত মন্দির আছে, সব মন্দির দেবোত্তর করা এবং সীমানা চিহ্নিত করা।

সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের লোক সংস্কৃতির মধ্যেও এই ধর্ম সমন্বয় আছে। হিন্দু, মুসলমান আমরা একটা বৃহত্তর সংস্কৃতির অংশ, আবার নিজ নিজ ধর্মের জন্য যে সংস্কৃতি সেই সংস্কৃতির মধ্যেও একটা সমন্বয় ছিল। এখানে কোনো প্রভেদ ছিল না, এখানে কোনো বিভেদ ছিল না। এটাকে শেখ হাসিনা ভাঙতে চেয়েছেন। দেখাতে চেয়েছেন এ দেশে বিভেদ-বিভাজনে ভরপুর। সুতরাং আমাকে সমর্থন করো। অন্য বিরোধী দল কাউকে সমর্থন করবেন না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলেই দেব মন্দির দেবালয় ভাঙা হয়েছে, প্রতিমা ভাঙা হয়েছে। কিন্তু যারা ধরা পড়েছেন তারা অধিকাংশই হচ্ছে আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো সংগঠনের লোক। আওয়ামী লীগ এখন পলাতক। শিশুদের রক্ত পান করে, কিশোরদের রক্ত পান করে রিকশাওয়ালা শ্রমিকদের রক্ত পান করে জনতার উত্তল তরঙ্গের যে ঢেউ সেই ঢেউের তোরে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। পালানোর পরেও কিন্তু উনার ষড়যন্ত্র কিন্তু থামছে না।

রিজভী বলেন, আজকে দেখছি বিবিসিতে তারা বলছে কলকাতায় আওয়ামী লীগের একটি অফিস নেওয়া হয়েছে। ওই অফিসে সব বড় বড় নেতাদের যাতায়াত ওখানে শুরু হয়েছে। কারণটা কি? আমাদের দেশের মানুষ ভাবছে যে কোনো কিছু সেখান থেকে করা হচ্ছে কিনা। একটা অত্যন্ত বড় ধরনের কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে কিনা এটা আজকে সবার মনের মধ্যে এই জিনিসটা ক্রিয়া করছে। যে একজন মেজর ধরা পড়ছে সে আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবে। এই ঘটনাগুলো কীসের? কলকাতায় কার্যালয় আর বাংলাদেশের ভেতরে এই সমস্ত ঘটনার যে যোগসূত্র নেই তা বলা যাবে না। মাস্টারমাইন্ড হয়ে শেখ হাসিনা সেইখান থেকে বাংলাদেশ বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করেছে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্ণা রায় দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম মহাসচিব মীর সরাফত আলী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী এবং জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক।