সৌদি আরব আরও দুইটি অ্যালকোহল স্টোর (মদের দোকান) খোলার পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে একটি থাকবে দেশটির রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর ধাহরান কম্পাউন্ডে কর্মরত অমুসলিম বিদেশিদের জন্য, আরেকটি জেদ্দায় কূটনীতিকদের জন্য। বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এই পরিকল্পনা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বাধীন সংস্কার–প্যাকেজের আরেকটি বড় ধাপ, যার মাধ্যমে ধীরে ধীরে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হচ্ছে এবং দেশকে আরও উন্মুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
সূত্রগুলোর একজন জানান, ধাহরানে নতুন দোকানটি আরামকোর মালিকানাধীন একটি কম্পাউন্ডে স্থাপন করা হবে এবং সেখানে আরামকোতে কর্মরত অমুসলিম বিদেশিরাই প্রবেশাধিকার পাবেন।
দুটি দোকানই ২০২৬ সালে খোলার কথা থাকলেও এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সময় জানানো হয়নি। সৌদি সরকারের গণমাধ্যম শাখা বা আরামকো—কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
রিয়াদে চালু হওয়া দোকানটিতে সাম্প্রতিক সময়ে অমুসলিম প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি–ধারীদেরও গ্রাহক হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। এই রেসিডেন্সি উদ্যোক্তা, বড় বিনিয়োগকারী এবং বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের দেওয়া হয়।
রিয়াদ স্টোর খোলার আগে অ্যালকোহল পাওয়া যেত কূটনৈতিক ব্যাগেজ, কালোবাজার বা বাসায় নিজের তৈরি ব্যবস্থার মাধ্যমে। উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে কুয়েত ছাড়া বেশিরভাগ দেশেই কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে অ্যালকোহল বৈধ।
অ্যালকোহল এখনও অধিকাংশ সৌদি নাগরিকের জন্য নিষিদ্ধ। তবুও বিন সালমানের সামাজিক সংস্কারের ফলে সিনেমা, কনসার্ট, মরুভূমিতে ডান্স ফেস্টিভ্যালসহ বহু কার্যক্রম এখন উন্মুক্ত হয়ে গেছে। নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি থেকে শুরু করে নারী–পুরুষের জনসমাগমে কড়াকড়ি শিথিল—সবই এই পরিবর্তনের অংশ।
অর্থনীতিকে বহুমুখী করতে এবং পর্যটক ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী আকর্ষণে এই শিথিলতা সৌদি আরবের বৃহত্তর কৌশলের অংশ।
আগে একটি আন্তর্জাতিক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে পর্যটন এলাকায় অ্যালকোহল বিক্রি চালুর পরিকল্পনা আছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ সে সময় এই দাবি অস্বীকার করে। তবুও বিষয়টি দেশটিতে তীব্র অনলাইন বিতর্ক সৃষ্টি করে—কারণ সৌদি রাজা ইসলামের দুই পবিত্র মসজিদের ‘খাদেম’ হিসেবেও পরিচিত।
সামাজিক উন্মুক্ততা দ্রুত এগোলেও অ্যালকোহলে শিথিলতা এখনো ধীরে ও সতর্ক গতিতে চলছে।
রেড সি গ্লোবাল প্রকল্পের অধীনে আগামী মে মাসের মধ্যে ১৭টি নতুন হোটেল খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এসব বিলাসবহুল রিসর্টে অ্যালকোহল দেওয়া হয় না।
এ মাসে পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতিবকে বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে অ্যালকোহল নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝি অনেক আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী অ্যালকোহল চান, তবে এখনো কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
যখন জিজ্ঞেস করা হয় ‘এখনো হয়নি’ মানে ভবিষ্যতে পরিবর্তন আসছে কি না, তখন তিনি বলেন, ‘এটা আপনি যেভাবে ব্যাখ্যা করতে চান, করতে পারেন।’


























